৮ রেলক্রসিংয়ে নেই গেইটম্যান-গেইটবার, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা
গাজীপুরের কালীগঞ্জ অঞ্চল দিয়ে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে সড়কের সমান্তরালে অতিক্রম করেছে সড়ক পথ। রেলওয়ের অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলো যেন এক মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রেলক্রসিংগুলোতে ঘটছে একের পর এক মারাত্মক দুর্ঘটনা। আর এসব দুর্ঘটনায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গত এক বছরে অরক্ষিত এসব রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে বিভিন্ন যানবাহনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানী হচ্ছে অন্যদিকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককেই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে এই রেল সড়ক দিয়ে ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ভৈরব হয়ে ময়মনসিংহে প্রায় ৫০টি ট্রেন যাতায়াত করে থাকে। কালীগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ২টি সুরক্ষিত ও ৮টি অরক্ষিতসহ মোট ১০টিরও বেশী রেলক্রসিং রয়েছে। এগুলো হলো-পুবাইল ব্রিজ সংলগ্ন (শিমুলিয়া), নলছাটা, দড়িপাড়া, বান্দাখোলা (কামারবাড়ী), তুমলিয়ার কাপাসিয়া মোড় সংলগ্ন (সাদ্দাম মার্কেট), খঞ্জনা (বড়নগর রোড), বালীগাঁও (মোড়ল মার্কেট), বালীগাঁও (চৌধুরী বাড়ি), বাঘারপাড়া ও চৈতারপাড়া (মূলগাও মাদ্রাসা সংলগ্ন ) রেলক্রসিং সমূহ। এসব রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে শিমুলিয়া ও দড়িপাড়া এলাকার দুটি রেলক্রসিংয়ে রেলওয়ের অনুমোদিত গেইটম্যান ও গেইটবার থাকলেও ঝুকিপূর্ণ বাকি ৮ টিতে নেই কোন গেইটম্যান ও গেইটবার। ফলে পথচারী, যাত্রী পরিবহন ও পণ্য পরিবহনে যানবাহন প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন এসব রেলক্রসিং দিয়ে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারী মাঝরাতে দড়িপাড়া রেলক্রসিংয়ে সিলেটগামী সুরমা মেইল ট্রেনের সঙ্গে প্রাণ মিল্কের একটি ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ হয়। এতে ঢাকা-ভৈরব রেল যোগাযোগ প্রায় ৭ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। পরে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন এসে রেল চলাচল স্বাভাবিক করে।
স্থানীয়দের দাবি, কিছু দিন পরপরই রেলওয়ে সড়কের অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এ সকল রেলক্রসিংয়ে গেইটম্যান না থাকায় স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত রেলক্রসিংগুলোতে গেইটম্যান ও গেইটবারের ব্যবস্থার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানায় তারা।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে আড়িখোলা ষ্টেশন মাষ্টার ইনচার্জ দিলীপ চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ষ্টেশন মাস্টার এস এম কামরুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ এলাকার বেশ কয়েকটি রেলক্রসিংয়ে গেইটম্যান না থাকার বিষয়টি জানি। প্রায়ই এ সকল রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার খবর পাই। তবে এ সকল বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাকে ষ্টেশন মাষ্টার ইনচার্জই অভিহিত করে থাকেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলেওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পুবাইল ব্রিজ সংলগ্ন শিমুলিয়া ও দড়িপাড়া- এই দুটি রেলক্রসিং ছাড়া এই মুহূর্তে অন্য কোনো রেলক্রসিংয়ে গেইটম্যান বা গেইটবার দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা রেলওয়ের এখন নেই। তবে পরবর্তীতে যদি নতুন করে গেইটম্যান বা গেইটবার স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ