কুমিল্লায় বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের গুলি, লাঠিচার্জ
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির পদযাত্রায় গুলি ও লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ। এতে জেলার চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার তীরচর ও মুরাদনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা গোমতায় ওই ঘটনা ঘটে। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন চান্দিনা থানায় কর্মরত কনস্টেবল শিপন হোসেন ও হাসান পারভেজ।
আহত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হলেন, চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আতিকুল আলম শাওন, সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, চান্দিনা উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহবায়ক ইসমাইল হোসেন, যুগ্ন আহবায়ক উজ্জ্বল, যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন, দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের যুবদল নেতা খোকন খাঁন, বনকোট গ্রামের সোহেল।
কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, কুমিল্লা (উঃ) জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আজহার মেম্বার, কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম, কুমিল্লা (উঃ) জেলা যুবদল নেতা ভিপি শাহীন, কুমিল্লা (ঊঃ) জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাবু, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. রবিউল আউয়াল সাইফুল, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক অব্দুর রহমান, বিএনপি নেত্রী তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম, রমজান হোসেনসহ আরও অন্তত ৪/৫জন।
আহতদের চান্দিনা, দেবীদ্বার, দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে আমরা দাউদকান্দির দড়ানিপাড়া এলাকায় জড়ো হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুল নবী সোহেল।
পুলিশের বাঁধার মুখে সেখান থেকে আমরা ফিরে এসে গোমতা ইসহাকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পদযাত্রা শুরু করি। এসময় পুলিশ এসে আমাদের বাঁধা দেয়। পুলিশের এমন ভূমিকায় যুবদল নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের সাথে বাক-বিতন্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এসময় পুলিশ এলোপাথারী গুলি বর্ষণ ও লাঠি চার্জ করে। এসময় চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতিসহ বিভিন্ন উপজেলার আরও অন্তত ২৫জন নেতা-কর্মী আহত হয়।
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি ও দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া বেগম, মহিলা দল নেতা তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম এর মধ্যে তাছলিমা বেগমের মাথা এবং হাতে বন্দুকের বাটের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছে। তাকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় কুমেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান সরকার জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে পদযাত্রা কর্মসূচী করছিলাম। এখানে এসে পুলিশ আমাদের বাঁধা দিয়ে লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে অন্তত ২৫জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এ ব্যপারে দেবীদ্বার উপজেলার ভাণী অস্থায়ী পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান হামলা ও আহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন। ব্যস্ততা দেখিয়ে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি, পরে বিস্তারিত জানাব বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দীন খাঁন জানান, বিএনপি নেতারা পদযাত্রার নামে মহাসড়কে বেড়িক্যাড সৃষ্টি করে উশৃঙ্খলতা করছিল। এসময় চান্দিনা থানা পুলিশ ও দেবীদ্বারের ভানী ক্যাম্প পুলিশ তাদেরকে মহাসড়ক থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। চান্দিনা থানার দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ১৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে।
কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পদযাত্রার উদ্দেশ্যে মহাসড়কে উঠতে চায়। নিরাপত্তার সার্থে আমরা তাদেরকে মহাসড়কে উঠতে না দিলে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হয়েছে। অপর পক্ষের কেউ আহত হয়েছে কি না, সেটি খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।
এএজেড