কক্সবাজারে প্যারাবন কেটে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে আইনি নোটিশ
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদী তীরের প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) কেটে বসতবাড়ি ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে একটি চক্র। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে এমন কর্মকাণ্ড। পরিবেশ বিধ্বংসী এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে দুই সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস)।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তাদের ঠিকানায় এই নোটিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইয়েসের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন।
যাদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
নোটিশে বলা হয়, বনভূমি ধ্বংস, গাছ কেটে জলাধার দখল ও ভরাট কার্যক্রম দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পর্যটন নগরী কক্সবাজার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নির্বিচারে পাহাড় কাটা, নদী ভরাট, প্যারাবন ধ্বংস এই জেলায় দৈনন্দিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাদ পড়ছে না পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, প্রাকৃতিক বন ও জলাধারগুলো।
সম্প্রতি কক্সবাজার পৌরসভার বাঁকখালী নদীসংলগ্ন এলাকায় এক রাতে ৮ একর প্যারাবন দখল করে ৩০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ভোররাত ৪টা থেকে শুরু করে দিনে ও রাতে প্যারাবনের গাছ কাটা হচ্ছে। বাঁকখালী নদী এলাকায় প্রায় ৬০০ হেক্টর প্যারাবন বেরিয়েছে, যা ২০৫ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল।
কক্সবাজার সমুদ্রউপকূলীয় এলাকার জঙ্গল, বনভূমি, সমুদ্রসৈকত, খাড়ি, বালিয়াড়ি, ম্যানগ্রোভ ও উপকূলীয় এলাকায় পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় প্রাকৃতিক গাছপালা কাটা বা আহরণ, সব ধরনের বন্যপ্রাণী হত্যা ও শিকার, প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস করা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বেলার করা একটি মামলায় বাঁকখালী নদী ঘিরে সব স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
টিটি/