অপহরণের দুই দিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার

লক্ষ্মীপুরে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে রিয়াজ হোসেন (২৫) নামে এক ফার্ণিচার কারিগরকে হত্যা করা হয়েছে। অপহরণের ২ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মান্দারী পূর্ব বাজার এলাকার উম্মে সালমা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ।
নিহত রিয়াজ দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যা মিকারের বাড়ির তোফায়েল আহমেদ দুলালের ছেলে। তিনি মান্দারী বাজারের দ্বীন ইসলাম ফার্ণিচার দোকানের নকশার কারিগর।
থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান থেকে বের হওয়ার পর থেকে রিয়াজ নিখোঁজ হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিয়াজের মোবাইল ফোন থেকে অপহরণকারীরা কল দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় নিহতের মা খুরশিদা বেগম চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এ নিয়ে থানা থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য র্যাবের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। পরে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মান্দারী বাজারের একটি ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষ থেকে রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস পোষ্ট করেন। জেলা পুলিশের ফেসবুক আইডিতে বলা হয়, একটি বড় বিল্ডিংয়ের নিচতলা করিডোর দিয়ে পেছনের একটি কক্ষে ঢুকে রিয়াজের মরদেহ দেখা যায়। মরদেহ উপর হয়ে পড়ে থাকায় মুখ দেখা যাচ্ছিল না। তার হাত-পা বাধা ছিল। খাটের ওপর জাজিম রক্তে মাখা ছিল। তার মুখমন্ডলসহ শরীরেও রক্ত ছড়িয়ে ছিল। দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াজের বড় ভাই রুবেলের সঙ্গে মান্দারী বাজারে একটি ফার্ণিচারের দোকানে নকশার কারিগর হিসেবে কাজ করত। তার সঙ্গে কাউছার নামে আরও একজন নকশার কারিগর ছিলেন। কাউছার বাজারের পাশেই উম্মে সালমা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতেন। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা, ঘটনার সঙ্গে কাউছার জড়িত রয়েছে।
নিহতের বাবা তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুই দিন আগে আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়। পরে তার মোবাইল থেকেই কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই মো. আবদুর রহিম জানান, মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম দিনেই রিয়াজকে হত্যা করা হয়। তার মাথায় ছোরার আঘাত ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালছে জখম দেখা গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবন সংশ্লিষ্ট দুইজনকে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
এসআইএইচ
