শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ
নওগাঁর মান্দায় চককেশব নিম্ন মাধ্যমিক আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের এক বহিস্কৃত শিক্ষকসহ কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার (১৩ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের চককেশব নিম্ন মাধ্যমিক আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে ঢুকে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মানববন্ধনে বক্তারা দাবী করেন । এদিকে ঘটনার দুইদিন পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. দাউদ খান বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মানবন্ধনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. দাউদ খান, সমাজ-বিজ্ঞানের শিক্ষক আব্দুল মতিন, সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহমানসহ হামলার স্বীকার হওয়া বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকরা বক্তব্য রাখেন। এতে বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার অন্যন্ত তিন শতাধীক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাড়ে বারোটার দিকে স্কুলটির বহিস্কৃত শিক্ষক মোজাফফর হোসেনের নেতৃত্বে চককেশব এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, আসমা খাতুন, আব্দুর রহিমসহ অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শ্রেনী কক্ষে প্রবেশ করে প্রথমে শিক্ষক ও অভিভাবকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে শ্রেনী কক্ষে থাকা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্চিত করেন। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনার র্তীর্ব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তারা।
প্রধান শিক্ষক মো. দাউদ খান দাবী করে বলেন, ঘটনার দিন শুধু শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনই নয়, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় নথীপত্র নষ্ট করেছে হামলাকারীরা। অনিয়মের অভিযোগে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার কারণেই মোজাফফর হোসেন নেতৃত্ব দিয়ে ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপর এই হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা আতংকে আছে। স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এই ঘটনার বিচার ও জরিতদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত বহিস্কৃত শিক্ষক মোজাফফর হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্চিত করার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই দিন আমি স্কুলে যায়নি। তবে শুনেছি সেদিন স্কুলে নাকি হট্রগোল হয়েছে।
এব্যাপারে মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ আলম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধর করা অবশ্যয় একটি অপরাধ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আইনগত ভাবে জড়িতদের শাস্তি হবে।
এএজেড