ছাত্রীদের ধাওয়ায় পালালো পিয়ন!
কলেজ ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ রয়েছে পিয়নের বিরুদ্ধে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও ওই পিয়নের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। উপরন্তু ওই পিয়ন সগৌরবে মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রবেশ করেন কলেজে। বিষয়টি দেখতে দেখতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ওই বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের ধাওয়ায় পালালো ওই পিয়ন!
ওই পিয়নের নাম শাহাদত হোসেনের (৩৫)। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলার রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের স্টাফ। ওই কলেজের অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকালে শাহাদত হোসেন নিজ মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। ওই সময় কলেজের ১৫-২০ জন ছাত্রী তাকে ধাওয়া দেয়। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ওই পিয়ন মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
ওই বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা জানান, পিয়ন শাহাদত হোসেন কলেজে দায়িত্ব পালনের পাশপাশি নৈশপ্রহরি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। দায়িত্ব পালনের সময় কলেজের আবাসিক এক ছাত্রীর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে অন্য ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
পরে কলেজ থেকে পিয়ন শাহাদত হোসেনের অপসারণ দাবি করে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে কলেজের ছাত্রীরা। বিষয়টি আমলে এনে কলেজ শিক্ষক মায়ারানী চক্রবর্তীকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অথচ এখনও পর্যন্ত ওই পিয়নের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান মায়ারানী চক্রবর্তী বলেন, পিয়নের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি তদন্ত করা হয়। তাছাড়া ছাত্রীর সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্কটি নিয়ে তাঁর স্ত্রীও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই পিয়নকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলেও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি পিয়ন শাহাদত হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, একজন পিয়নের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কলেজের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তবে কেন কী কারনে অধ্যক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে শিক্ষক ও ছাত্রীদের মাঝে।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন বলেন, পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে ওই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বলেন, কলেজের আভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএজেড