কিশোরগঞ্জে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে এডিপির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও ফসল রক্ষা বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া ৪০ দিনের প্রকল্প কর্মসূচির টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, ইটনা উপজেলা প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহে লিখিত অভিযোগ করেছেন ধনপুর ইউনিয়নের দৈলং গ্রামের মৃত দ্বিগীজয় দাসের ছেলে বিনোদ দাস।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত এডিবি প্রকল্পের আওতায় দৈলং মৌজাধীন কাটাহর সরকার বাড়ির খাল থেকে দৈলং ছোট কালিগাছ পর্যন্ত ও দৈলং গ্রামের দক্ষিণ মাঠ থেকে কাউয়াদাইড় মুখ পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধ এই দুইটি প্রকল্পের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাবু প্রদীপ কুমার দাস মাটি ভরাট কিংবা কোনো কাজ না করেই প্রকল্পের সব টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
সূত্র জানায়, ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বর্তমান চেয়ারম্যান বাবু প্রদীপ কুমার দাসই চেয়ারম্যান ছিলেন। তখনও তিনি এডিবি প্রকল্পের আওয়তায় ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সর্বমোট ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে দৈলং নতুন হাটি উত্তর পাশে পাকা ঘাট নির্মাণের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। তবে সেখানে কোনো ঘাঁট নির্মাণ না করেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে নিজের পকেট ভারি করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৈলং নতুন হাটির উত্তর পাশে পাকা ঘাট নির্মাণের কথা থাকলেও কোনোকালে কোনো ঘাট নির্মাণ করেননি ইউপি চেয়ারম্যান। ইটনা উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কাজের বিবরণী বইয়ের ৩৮ পৃষ্ঠার ক্রমিক নম্বর ১১-তে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু প্রদীপ কুমার দাস জানান, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সব মিথ্যা। আমার প্রতিপক্ষ আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এসব অভিযোগ এনেছেন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পাকা ঘাট নির্মাণের জন্য এ রকম কোনো বরাদ্দ আমি পাইনি আর তখন এ রকম কোনো বরাদ্দ ছিল না।
এ প্রসঙ্গে জানতে ইটনা উপজেলার পিআইও খলিলুর রহমানকে বরাদ্দের বিষয়ে বার বার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার জানান, গত বছরের কাঁচা মাটির রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পাকা ঘাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প বরাদ্দ হয়েছিল এবং কর্মসম্পাদন বইয়ে সেই কাজের ১০০% অগ্রগতি দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ জানান, কেউ যদি এ রকম অপকর্মের বিরুদ্ধে জড়িত থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসআইএইচ