কেক-পেটিস খেয়ে ২ বোনের মৃত্যু ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
গাজীপুরে কেক-পেটিস খাওয়ার এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের বাবার দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চিকিৎসকরা বলছেন,খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার গাজীপুর মহানগরীর সালনা ইপসা গেট এলাকায় পেটিস ও কেক খেয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় আশামনি (৬) ও তার ছোট বোন আলিফা আক্তারের (২)। তারা দুজনই ওই এলাকার কারখানা শ্রমিক আশরাফুল ইসলামের মেয়ে। এ ঘটনায় সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে মামলা করেন নিহতদের বাবা । পরে ওইদিন সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-গাজীপুর সদর থানার দক্ষিণ সালনা এলাকার বাসিন্দা লাবু মিয়ার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার শিশু মিয়ার ছেলে মো. সোহেল (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর থানার কোনাউর এলাকার দানু মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৫) ও একই গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন(৪৫)। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম দোকানদার। অন্যরা সালনা এলাকার বেকারির কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান শাফি মোহাইমেন বলেন, নিহত দুই শিশুর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে তাদের মৃত্যু খাদ্যে বিষক্রিয়ায় হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে খাদ্যে বিষ কোথা থেকে আসতে পারে।
এ বিষয়ে নিহতের স্বজনরা জানায়, গাজীপুর মহানগরীর সালনা ইসপা গেট এলাকার এরশাদ হোসেনের বাড়িতে আশরাফুল ইসলাম সপরিবারে বসবাস করত। স্বামী-স্ত্রী দুজনই কারখানায় কাজ করলেও আশরাফুল পুরাতন চাকরি ছেড়ে দিয়েছে গত ডিসেম্বর মাসে। নতুন চাকরিতে তার যোগদান করার কথা রয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি, যে কারণে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। রবিবার (৩০) সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েদের আবদারের কারণে স্থানীয় দোকান থেকে পেটিস ও কেক কিনে দেন আশরাফুল। তারা সেগুলি খেয়ে পাশেই খেলা করছিল। হঠাৎ বড় মেয়ে আশামনি অসুস্থ হয়ে বমি করতে থাকে। অসুস্থ অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক আশামনিকে মৃত ঘোষণা করেন। এর এক ঘণ্টা পর ছোট মেয়ে হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে পড়ে সেও মারা যায়।
শিশুদের পরিবার যে বাড়িতে ভাড়া থাকত সেই বাড়ির মালিক এরশাদ হোসেন বলেন, ওই বাসার ভাড়াটিয়া নিহত শিশুদের ফুফাতো ভাই সিয়ামও (৬ মাস) অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনার পর সোমবার বিকালে নিহত শিশুদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল করলে শিশুদের মা সফুরা বেগম বলেন, এখন গাড়িতে আছি। মেয়েদের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, একসঙ্গে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় দুই বোনের ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। পারিবারিক কলহ, পূর্বশত্রুতাসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
এসআইএইচ