ঢাকাপ্রকাশ-এ সংবাদ প্রকাশের পর অভিযান, ২ ড্রেজার জব্দ ও জরিমানা

'নদী থেকে তোলা বালু দিয়েই নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ'-শিরোনামে গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকাপ্রকাশ-এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের। অবশেষে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের ২টি ড্রেজার মেশিন জব্দ ও বালু পরিবহনে ব্যবহৃত একটি ট্রাক আটক ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় বালুর বাঁধ নামক স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার। এসময় তার অফিসের কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানের সময় অবৈধভাবে তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার সময় দুটি ড্রেজার (শ্যালো মেশিন) জব্দ করা হয়। আর তিস্তা নদী থেকে বালু পরিবহনের সময় বালুভর্তি একটি ট্রাক্টর আটক করা হয়। পরে দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ট্রাক্টর মালিক আশরাফুলের ইসলামকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও জি আর সারোয়ার। ট্রাক্টর মালিক আশরাফুল ইসলাম মহিষখোচা ইউনিয়নের বাসিন্দা। আর ড্রেজার মেশিন মালিক উপস্থিত না থাকায় জব্দকৃত মালামাল থানায় হস্তান্তর করে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, লালমনিরহাটে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হয় শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি। নদী ভাঙনরোধে সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিলেও কতিপয় বালুখেকো তিস্তা নদী থেকে মাসের পর মাস অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। শুধু বালু উত্তোলনই নয়, নদী থেকে প্রতিদিন শত শত বালু ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে লাভবান হচ্ছেন বালুখেকোরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীতীরের বসবাসরত পরিবারগুলো।
এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করায় স্বস্তি ফিরেছে তিস্তাতীরের বাসিন্দাদের মাঝে। তবে আতঙ্ক রয়েই গেছে। কুটিরপাড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, অভিযানের জন্য হয়তো কয়েকদিনের জন্য বন্ধ থাকে বালু উত্তোলন ও পরিবহন। কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে বালুখেকোরা আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ ধরনের অভিযান শুধু কুটিরপাড় এলাকায় নয়, পুরো উপজেলায় পরিচালনার দাবি জানান তিনি।
এদিকে ঢাকাপ্রকাশ-এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদারদের। অবশেষে তারাও পাটগ্রামের বালু দিয়ে সিসি ব্লক তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইউএনও জি আর সারোয়ার জানান, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য ঢাকাপ্রকাশ-কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এসজি
