মাদারীপুরে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ১৫
মাদারীপুরে ফুটবল খেলা নিয়ে দুই কিশোরের মধ্যে তর্কাতর্কির জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে কয়েক দফায় সদর উপজেলার নয়াচর-মধ্য খাগদীর সীমান্তবর্তী আব্দুল মন্নান সেতুর দুই প্রান্তে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে সাতজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন-জেলার গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আবুল কাশেম (৩৪), চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. রোমান (৩৩), সদর থানার কনস্টেবল মো. সাগর (২৫), নয়াচর এলাকার আচমত খাঁয়ের ছেলে সাব্বির খাঁ (২৪), কুদ্দুস মুনশির ছেলে জয়নাল মুনশি (২৩), আসলাম মোল্লার ছেলে রাজু মোল্লা (২০), বেল্লাল ফকিরের ছেলে আল-আমিন (২৫)। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন-নয়াচর এলাকার মোকসেদ মোল্লার ছেলে মিঠু মোল্লা (২৫), একই গ্রামের আসলাম মোল্লার দুই ছেলে রাসেল মোল্লা (২১) ও রাসেদ মোল্লা (১৮), জাফর মীরের ছেলে হৃদয় মীর (১৪) এবং উজ্জ্বল চৌকিদারের ছেলে অনিক চৌকিদার (১৩)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মধ্য খাগদী এলাকার টিটু খানের ছেলে মনা খানের সঙ্গে নয়াচর এলাকার কুদ্দুস ফরাজির ছেলে ফরিদ ফরাজির কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারধরের ঘটনাও ঘটে। এরই জের ধরে রাতে দুইপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আব্দুল মন্নান সেতুর দুইপ্রান্তে অবস্থান নেয় পুলিশ। পরে ৭১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সদর হাসপাতাল থেকে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রিয়াদ মাহমুদ বলেন, মারামারির ঘটনায় বেশ কয়েকজন সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলেও গেছেন। এর মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হামলায় আহত চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. রোমান বলেন, ফুটবল খেলা নিয়ে মনা খান নামে এক কিশোরকে মারধরকে কেন্দ্র করেই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত। প্রথমে আমরা দুইপক্ষের লোকজনকে সেতুর দুই পাড় থেকে সরিয়ে দেই। পরে সেতুর দুই প্রান্তে অসংখ্য লোকজন জড়ো হয়ে হটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। পুলিশ ফাঁকাগুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, দুইপক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করেছে। ওই এলাকায় ফের সংঘাত এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক। তবে সংঘর্ষের মূলে যারা রয়েছে তাদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
এসআইএইচ