ছেলের রেজাল্টে নিশ্চিত হলো পরিবারের ঠিকানা
নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের বাস টার্মিনাল (মাদারীপুর) এলাকার শ্যামল কুমার শীল ও স্বপ্না রানী শীলের ছেলে সৌরভ কুমার শীল। দাদা-দাদাী-বাবা-মাসহ ৫ সদস্যর পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন বাবা শ্যামল কুমার শীল। নিজেদের কোন জায়গা-জমি না থাকায় বাস করেন খাস জায়গায়। তবে সৌরভ পড়ালেখায় অত্যন্ত মনোযোগী হওয়ায় শতকষ্টেও বাবা-মা বন্ধ করেননি ওই পড়ালেখা।
সারাদিন ফ্লাক্সে করে চা বিক্রি করে সংসার নির্বাহের পাশাপাশি দিয়েছেন পড়ালেখার খরচও। কিন্ত ৪-৫ বছর থেকে বাবা অসুস্থ্য হওয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি সকলের আহারের কথা,চিন্তা করে ছেলে হাতে তুলে নেয়,বাবার চা বিক্রির ফ্লাক্স। স্কুল শেষে বিক্রি করেন চা। আর ওই চা বিক্রির জন্য ছুটে বেড়ান বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন জায়গায়। আবার চা বিক্রি শেষে বাড়ি ফিরেই বসতেন পড়তে। অবশেষে গত এসএসসির ফলাফলে সৌরভ অর্জন করে জিপিএ ৫।
তার বিষয়টি জানাজানি হলে বিস্ময় ফুটে ওঠে স্থানীয়দের চোখে মুখে। এক পর্যায়ে ঘটনাটি পৌছে যায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের কাছে। তিনি খুশি হয়ে সৌরভকে উপহার দেন ল্যাপটপ। নিজে দায়িত্ব নেন তার পড়ালেখার। পাশাপাশি তার পরিবারের অসহায়ত্বের কথা শুনে ওই পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের ব্যবস্থাও করেন। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম মঙ্গলবার সকালে
বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,ওই ঘর নির্মাণের জন্য সৌরভের বাড়ির পাশেই জমি নির্বাচনের জন্য সোমবার বিকালে তারা গিয়েছিলেন। যে জমিটি পছন্দ করা,হয়েছে তার বিষয়ে খোঁজ নিতে উপজেলা ভুমি কড়মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই ওই তথ্য পেলে ঘর নির্মাণের প্রয়োজনীয়,ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সৌরভ কুমার শীল জানান, তিনি সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এ প্লাস পেয়েছে। ভবিষ্যতেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান। তার পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এএজেড