বিএনপি নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত, থানায় অভিযোগ
ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত নিতে এসে একপর্যায়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপি’র বর্তমান ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক এবং শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. মাসুদ রানা।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এ নিয়ে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এদিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- কুড়িগ্রাম শহরের মোল্লাপাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের ছেলে মো. মাসুদ রানা, পৌর এলাকার পুরাতন পশু হাসপাতাল মোড়ের শামসুল হকের ছেলে রুপন মিয়া, পুরাতন রেলস্টেশনের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আমিনুর রহমান, কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ মিয়া।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, পিয়নের মুখে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হট্টগোলের খবর পেয়ে সেখানে যাই। কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের ভর্তি বাতিল বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মো. মাসুদ রানা প্রথমে আমার উপর চড়াও হয়। এরপর তিনি ধাক্কা দিতে দিতে আমাকে এক কোনায় নিয়ে যায়।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদ রানা বলেন, আমার সন্তানকে গত ১৮ ডিসেম্বর স্কুলে ভর্তি করাই। পরে ২৮ ডিসেম্বর স্কুলের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারি আমার সন্তানসহ ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। সে ব্যাপারে কয়েকজন অভিভাবকসহ প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত দিয়ে কপি গ্রহণ করি। এসময় কথা বলার একপর্যায়ে একজন শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে পড়লে তার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। তবে আমি তাকে লাঞ্ছিত করিনি।
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক বলেন, স্কুলে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এরই প্রতিবাদ করায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানা। তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলতে বলতে তাকে ধাক্কা দিতে দিতে এক কোনায় নিয়ে যান। এ ব্যাপারে মাসুদ রানাসহ অভিভাবক মো. রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও মো. বিদ্যুৎ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের নামে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এসজি