কুসুম্বা মসজিদের প্রাচীন কালা পাথর এখন তেঁতুলতলায়
নওগাঁর মান্দায় ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ প্রবেশ সড়কের ধারে পড়ে থাকা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কালা পাথরের প্রাচীন নিদর্শনটি (সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহের কবর ফলক বা শিরানা) স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরর উদ্যগে ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় কুসুম্বা মসজিদের উত্তরপাশে তেঁতুলতলায় এটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
এসময় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানা, প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর মহাস্থানগড় কোস্টাডিয়ান রাজিয়া সুলতানা, প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর পাহাড়পুরের কোস্টাডিয়ান ফজলুল করিম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের গবেষনা সহকারী হাসানাত বিন ইসলাম, মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক, উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুল ইসলাম মিয়া, কুসুম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওফল আলী মণ্ডল, কুসুম্বা শাহী মসজিদের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এ কাজে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও সহযোগিতা করেন।
নওগাঁ ঐতিহাসিক পাহাড়পুর জাদুঘরের কাষ্টোডিয়ান ফজলুল করিম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, 'এই কালো পাথরের অংশটি দেখতে অনেকটা কবরের উপরের অংশের মতো দেখা যায়। তবে এটি কি তা সঠিক ভাবে এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। কালো পাথরটির উপর একটি আরবি ক্যালিগ্রাফি রয়েছে যার পাঠোদ্ধার করা হলে এটির সঠিক ইতিহাস জানা সম্ভব হবে। কুসুম্বা মসজিদ থেকে একটু দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় কালো পাথরের অংশটি পড়ে থাকায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহায়তায় এটিকে কুসুম্বা মসজিদের সামনে নিয়ে আসা হয়'।
জনশ্রুতি রয়েছে সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহের স্ত্রী কুসুম বিবি সেই সময় মান্দার কুসুম্বা গ্রামে অবস্থান করতেন। সেই সুবাদে শেষ বয়সে সুলতান কুসুম্বা গ্রামে স্ত্রীর কাছে অবস্থান করাও বিচিত্র নয়। যেহেতু সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহ মৃত্যুর সময় কাথায় অবস্থান করছিলেন প্রচলিত গ্রন্থে তার উল্লেখ না থাকায় ধরে নেওয়া যায় তিনি কুসুম্বাতে সমাহিত রয়েছেন। প্রাচীন এ নিদর্শন সম্পর্কে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ইমরুল কায়েস চৌধুরী 'কালান্তর নওগাঁ' গ্রন্থে উল্লেখ করেন লিপিযুক্ত প্রস্তর খণ্ডটি সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহের কবর ফলক বা শিরানা।
এ প্রসঙ্গে প্রততত্ত্ব অধিদপ্তর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, 'কালা পাথরের খণ্ডটি সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রাচীন একটি নিদর্শন। এটি সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহের কবর ফলক বা শিরানা কিনা বলা যাচ্ছে না। আরবি ক্যালিগ্রাফি পাঠোদ্ধার হলেই বিস্তারিত জানা যাবে'।
এএজেড