ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুর ভরাট করে দেদারসে চলছে ভবন নির্মাণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ক্রমাগতভাবে পুকুর ভরাট চললেও এর বিরুদ্ধে যারা ব্যবস্থা নেবেন তারা সব নিশ্চুপ। আবার কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, পুকুর ভরাট হওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে খবর হলে বিষয়টি নিয়ে কিছু আনাগোনা চলে পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। তবে কিছুদিন পরই পুকুর ভরাটকারী ও ভরাটে বাধাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অদৃশ্য কারণে সেই ঝামেলা মিটে যায়। ফলে ভরাট হওয়া পুকুরে নির্বিঘ্নে বহুতল ভবন নির্মাণ হতে পারে।
গত কয়েক বছরে এই কৌশলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বেশিরভাগ পুকুর ভরাট হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত ভরাট হয়ে যাওয়া কোনো পুকুর পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দ্বারা উদ্ধার হওয়ার ঘটনা নেই। একবার যে পুকুর ভরাট হয়ে যায় তাকে আর কখনোই উদ্ধার করা যায় না; কিন্তু তা সত্ত্বেও পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নীরব থাকে কেন, এটি একটি বড় প্রশ্ন।
সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব পাইকপাড়ার রাম ঠাকুর মন্দিরের পাশের পুকুরটির একটি অংশে বিল্ডিং নির্মাণ করছেন দুলাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি। দুলাল মিয়ার নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের পাশে আরও আগে একই পুকুরের জায়গা ভরাট করে বিল্ডিং নির্মাণ করেছে অন্যরা। তবে নির্মাণকাজের শুরুর দিকে তাকে জরিমানা করে প্রশাসন। এ সময় তিন মাসের মধ্যে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দুলালকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি। ইতিমধ্যে ভবনটির ছাদ ঢালাই সম্পূর্ণ হয়েছে।
এই পুকুরটি ভরাটের বিরুদ্ধে বিল্ডিংটির পাশে একটি সরু রাস্তায় পুকুর ভরাটের জনসচেতনতামূলক একটি বিজ্ঞাপন সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিবেশ অধিদপ্তর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা বিষয়টি গায়েই মাখেনি। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আহমেদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘পুকুরটি ভরাট করে বিল্ডিং নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।’ তবে এখন পর্যন্ত পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল, যেহেতু দুলাল মিয়া আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট করে বিল্ডিং নির্মাণ করেছে, তাই তার বিরুদ্ধের নিয়মিত মামলা করবে পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে এটিও যেন পৌরসভার প্রকৌশলীর কথার মতো ‘কথার কথা’ হয়ে রইল।
পুকুর ভরাটকারী দুলাল মিয়া এই প্রতিবেদককে ফোনে জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে মীমাংসা করেই তিনি আবার পুকুরের ভিতর বিল্ডিং নির্মাণের কাজ ধরেছেন।
এসকে/এসএ/