আমাদের বাঁচান–গড়াইপাড়ের বাসিন্দাদের আর্তনাদ
মাঝ শীতের শুকনো নদী। জোয়ার বা ঢেউয়ের কোনো বালাই নেই। তবু যেন হাঙরের গ্রাসে গিলে চলেছে নদী তীরবর্তী বসতঘর। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় গড়াই নদীর লাগাতার ভাঙনে দিশেহারা কয়েকশ' পরিবার।
উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের বহলা গোবিন্দপুর ঈদগাহর পাশে গড়াই নদীর অব্যাহত ভাঙনে চরম আতঙ্কে দিন পার করছে এলাকাবাসী। যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। ১০-১৫ দিন ধরে নদী ভাঙন চরম আকার ধারণ করেছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন আহমেদ বলেন, 'আমরা খুবই গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই৷ আমাদের জায়গা জমি নেই৷ শেষ সম্বল মাথা গোঁজার এ ঠাঁইটুকু নদী গিলে নিলে কোথায় যাব?’
অপর বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, ‘বতসবাড়িটুকুই শেষ সম্বল। সেটুকু না থাকলে মা-বাবা, বউ-ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন আমাদের বাঁচান, এ নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে দেন।'
এ বিষয়ে চাপড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মো. মোতাহার হোসেন বলেন, 'ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে৷ এলাকাবাসী খুবই বিপদের মধ্যে রয়েছে৷ ভাঙনরোধে এখনই ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।'
চাপড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এনামুল হক মনজুর বলেন, 'আমি গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি। এরই মধ্যে কয়েকশ' পরিবারের বসতবাড়ি নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বহলা গোবিন্দপুর এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। নদীর পাশে একটা বাঁধ রয়েছে। সেটিও এখন অনেক ঝুঁকিতে। ’
তিনি আরো বলেন, 'আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব নদী ভাঙন রোধে ব্লক দিয়ে এলাকাটাকে বাঁচাতে। এরই মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করছি। যত দ্রুত সম্ভব এ নদী ভাঙন রোধ করতে হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা নিলে এলাকাবাসী অনেক উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন বলেন, 'নদী ভাঙনের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে৷ যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এসএন