১৭তম স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
রংপুরের পীরগঞ্জে ১৭তম বিয়ের পর স্ত্রী তানজিনা বেগমকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় তার ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগমকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ১৬ বছর পর হত্যা মামলায় আদালত এ রায় দেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক এম আলী আহমেদ এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আবু সাঈদ পলাতক ছিলেন। মামলার অপর আসামি আবু সাঈদের ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগমকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে তাছকিরা বেগমও পলাতক রয়েছেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের তাজিম উদ্দিনের মেয়ে তানজিনা খাতুনের সঙ্গে ওই উপজেলার পালগড় গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে আবু সাঈদের বিয়ে হয়। তানজিনা ছিলেন আবু সাঈদের ১৭তম স্ত্রী। পরে আবু সাঈদ তাছকিরা বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। ঘটনার দিন ২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে ১৫ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে আবু সাঈদ (তৎকালীন বয়স ৪২ বছর) তার নববিবাহিত স্ত্রী তাছকিরার (তৎকালীন বয়স ২০ বছর) সহযোগিতায় তানজিনাকে (তৎকালীন বয়স ৩২) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পরের দিন ৯ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ থানায় দুজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন তানজিনার বাবা তাজিম উদ্দিন।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক। ৩০ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ২৬ জুলাই জামিন পেয়ে কিছুদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পলাতক রয়েছেন আসামি আবু সাঈদ। অন্যদিকে তাছকিরা বেগম ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে ২০১৪ সালের ১৮ মে থেকে পলাতক রয়েছেন। এই মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি তাজিবুর রহমান লাইজু জানান, অভিযুক্ত আবু সাঈদ যৌতুকের লোভে একের পর এক বিয়ে করছিলেন। তানজিনাকে বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুকের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দেন তার বাবা। বাকি ১৫ হাজার টাকার দাবিতে তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় তার কোনো মতামত পাওয়া যায়নি।
এসজি