বিএমডিএ সেচে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
নওগাঁর মান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর শাহানাপাড়া এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি গভীর নলকূপের পরিচালনাকারী (অপারেটর) পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে। সেচের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলে কৃষকেরা ওই অপারেটরকে পরিবর্তনের দাবি জানান। স্থানীয় প্রায় ৭০ জন কৃষক ও জমির মালিক ওই পরিচালনাকারীর বিরুদ্ধে গত ২৮ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা বিএমডিএ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর শাহানাপাড়া গ্রামে বিএমডিএ গভীর নলকূপটি ১৯৮৫ সালে স্থাপন করে। এ নলকূপের অধীনে গোবিন্দপুর ও বাঙ্গালপাড়া গ্রামের প্রায় ১৫০ জন কৃষকের ১৮০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া হয়। গভীর নলকূপটি স্থাপনের পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্তু সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে বোরো মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে গোবিন্দপুর শাহানাপাড়া গ্রামের রেজাউলের ইসলামের ছেলে পারভেজ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ওই নলকূপের অপারেটর হিসেবে তাঁর মা পারুল বেগমকে নিয়োগ করিয়ে নেন।
কাগজে-কলমে পারুল বেগম অপারেটর হলেও নলকূপটি পরিচালনা করে তাঁর ছেলে পারভেজ। তাঁরা নলকূপটির পরিচালনার দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকার নির্ধারিত সেচ চার্জের অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায় করে আসছে। অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায় করলেও খেতে ঠিক মতো পানি না দেওয়ায় গত কয়েক মৌসুমে বোরো ও আমন আবাদ ব্যাহত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক মোশারফ হোসেন, রহমতুল্লাহ, রিয়াজ উদ্দীন, আব্দুল জব্বারসহ ১৫-১৬ জন জানান, গত বোরো মৌসুমে আশপাশের অন্যান্য গভীর নলকূপগুলোতে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ বাবদ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হলেও ওই নলকূপ থেকে সেচ চার্জ নেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা করে।
এক সপ্তাহ ধরে অনেকেই বোরো ধান লাগানোর জন্য জমি তৈরির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এবারেও প্রতি বিঘা জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ১ হাজার ৪০০ টাকা সেচ চার্জ নির্ধারণ করেছে অপারেটর ও তাঁর মনগড়া নলকূপ পরিচালনা কমিটি। এ বছর পারুল বেগমকে দিয়ে আর নলকূপ পরিচালনা করে নিতে চাইছে না বলে জানান কৃষকেরা।
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে অপারেটর পারুল বেগমের ছেলে পারভেজ রহমান বলেন, তাঁর মা নলকূপটি পরিচালনার দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সেচ কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত চার্জের বাইরে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেইনি। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এবং নলকূপটি দখলে নেওয়ার জন্য স্থানীয় কয়েকজন লোক তাঁর মা ও তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।
মান্দা উপজেলা বিএমডিএ কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, কৃষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নলকূপটি পরিচালনার জন্য একটি সেচ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেচ কমিটি ঠিক করবে কে নলকূপের অপারেটর হবেন? এছাড়া সেচ কমিটি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে সেচ চার্জ নির্ধারণ করে দেবে। আশা করি, নলকূপটি নিয়ে ভবিষ্যতে আর কোনো বিরোধ থাকবে না।
এএজেড