ঢাকাপ্রকাশ-এ সংবাদ প্রকাশ, মানতা সম্প্রদায় পেল শীতবস্ত্র
'কন কনে শীতে দূর্ভোগ মানুষের' শীরোনামে গত ৬ জানুয়ারী ঢাকা প্রকাশ অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর, সেই মানতা সম্প্রদায় জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করছে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার মজুচৌধুরী হাট এলাকায় 'মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন স্কুল' সংলগ্ন বসবাসরত মানতা সম্প্রদায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো মাঝে প্রায় চার শতাধিক শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মো. আশরাফুজ্জামান মাহফুজ তাঁর সহধর্মিণী ও পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করেন
শীতবস্ত্র (কম্বল) পেয়ে অসহায় মানুষ-গুলোর মুখে আনন্দের চাপ দেখা গেছে। মানতা জনগোষ্ঠীরা জানান, শীতে আর কেউ আমাদের একটি কম্বল দেয়নি। আল্লাহ পুলিশ সুপারকে বাঁচিয়ে রাখুক। অনেক ভালো মানুষ, নিজেই নৌকায় চড়ে আমাদের কাছে এসে হাতে-হাতে কম্বল দিয়েছেন। যার টোকেন ছিলো, তার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কম্বল।
শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপারের সহধর্মিণী সেলিনা মাহফুজ, ডিআইও-১ একেএম আজিজুর রহমান মিয়া, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) প্রশাসন প্রবীর কুমার দাস ও লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মোসলেহ উদ্দিন।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, অনলাইন সংবাদপত্র 'ঢাকা প্রকাশ' এ সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টি আমার সহধর্মিণীর দৃষ্টিগোচর হয়। তার অনুপ্রেরণা ও কেন্দ্রীয় পুনাক সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরীর দিকনির্দেশনায় আমরা জেলা পুলিশ নদীতে বসবাসরত ও অসহায় মানুষের জন্য এ শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করি। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর দেশের প্রতিটি মানবিক কাজে সবার আগে এগিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, জীবন-জীবিকা ও বেঁচে থাকার তাগিদে এসব মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নৌকায় বসবাস করেন। এজন্য তারা 'মানতা' সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত। 'মানতা' এমন একটি জনগোষ্ঠী তাদের নৌকায় বসবাস। জন্ম নৌকায়, বেড়ে ওঠা নৌকায়, বিয়ে নৌকায়, জীবন সংসার কাটে নৌকায়। অবশেষে মৃত্যুও হয় নৌকায়।
একসময় তাদের পূর্বপুরুষের সবকিছুই ছিল নদীর তীরবর্তী এলাকায়। ক্রমাগত নদীভাঙনে নিঃস্ব হতে হতে এরা এখন নৌকার বাসিন্দা। এক একটি নৌকা এক একটি পরিবার। নৌকার মাঝখানে ঘুমানোর স্থান, পেছনের অংশে রান্নাবান্না আর খাওয়া-দাওয়া এবং সামনের অংশে কাজকর্ম। 'মানতা' সম্প্রদায়ের আয়ের উৎস মাছধরা। পরিবারের সবাই মিলে নদীতে মাছ ধরতে যান। মাছধরা শেষে আবার কিনারে নির্দিষ্ট স্থানে ফিরে আসে। এরা দল বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় বাস করে।
এএজেড