গভীর রাতে ১৭ বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

মাদারীপুরের কালকিনিতে গভীর রাতে ১৭টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় থানার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের খানকান্দি এলাকার সাবেক মেম্বার মেসের সরদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মেসের সরদারের ছেলে মিরাজ সরদার (৪২) কে গ্রেপ্তারের উদ্দেশে ২০/৩০ জন পুলিশ সদস্য এসে ১৭টি বসতঘরে তল্লাশি করে নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে যায়। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহেদ পারভেজের সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবাররা।
এ বিষয়ে মিরাজ সরদারের স্ত্রী বলেন, ‘২০/৩০ জন পুলিশ আইয়া দরজা অনেক পিডাইছে, আমি একা মহিলা দেখে খুলি নাই। পরে শাবল দিয়ে দরজা ভাঙ্গিয়া খুইলা ঘরে ঢোকছে। আমার দরজা খুলি নাই। ছেলে ভয়ে কাঁপতেছে। দরজা ভাঙ্গার ভয়ে আমার দরজা পরে খুলছি। খোলার পর আমার বালিশের তলে ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ও মিটার স্কেল নিয়ে গেছে। আমরা ডরে কাইন্না মরে গেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
মিরাজ সরদার বলেন, ‘মিলন সরদারের ইটভাটায় এনায়েতনগরের ১০০/১৫০ লোকজন কাজ করে। শাহেদ পারভেজ ওই ভাটা ও বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিছে। আমি ওখানে যাই কেন? এ জন্য আমি চারডা মামলা খাইছি। এক বছর আগে র্যাব আমার পায়ে গুলি করে। নয় মাস পর গুলি বের করি বরিশালে গিয়ে। বাড়ি থাকতে পারি না প্রশাসনের কারণে। পুলিশ আমাকে মাইরা ফেলার হুমকি দিছে। কিসের জন্য? আমার অপরাধ কি? জানতে চাই। এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যানকে জানাইছি, তারা বলেছে ওসি এমপি সাহেব মিটিংয়ে আছে। পরে গিয়ে আমরা তার (ওসি) সঙ্গে কথা বলব।’
একই বাড়ির আনিস সরদারের ছেলে শহীদুল সরদার বলেন, ‘আলীনগরে গ্যাঞ্জাম। ওই গ্যাঞ্জামে আমরা ৪টি মামলার আসামি। শাহেদ পারভেজের সঙ্গে কথা হয়েছে ওইখানে আমরা আর যাবো না। আমরা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিছি। তখন থানার ওসি আমাদের উপর খুব গরম ছিল। পরশু মোহাম্মদ তালুকদারকে কোপাইছে আমরা শুনছি। আমরা ওইখানে যাই নাই। গতকাল রাতে আইসা কালকিনি থানার ওসির নির্দেশে ১৭টি বসতঘরে যার যা পাইছে নগদ টাকা ও মোবাইল লুট করেছে। এ ছাড়াও অকথ্যা ভাষায় মহিলাদের গালাগালি করেছে।‘
শহীদুল সরদার আরও বলেন, ‘পুলিশ কেন আসছে জানতে চাইলে তিনি (ওসি) বলেন-মিরাজ সরদার না কি ওই এলাকায় বোমা নিয়ে, লোকজন নিয়ে যায়, গ্যাঞ্জাম করে। আপনারা একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন। হাওলাদার ও মোল্লারা মিলে মিলন সরদারের লোকদের মারধর করে।’ তবে এ ঘটনার সুনির্দিষ্ট যাচাই-বাছাই করে বিচার দাবি করছেন তিনি।
এদিকে বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন। তিনি বলেন, একাধিক মামলার আসামি মিরাজ সরদারকে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।
তিনি আরও বলেন, মিরাজ একজন মাদক ব্যবসায়ী ও বিষ্ফোরক দ্রব্য সাপ্লাই দেন এবং ফাসিয়াতলার ঘটনায় তিনি লিড দেন। মিরাজ ৩/৪ কিলোমিটার এলাকা সোর্স মেইনটেইন করে চলেন এবং এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন।
এসআইএইচ
