৬১০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেল দুটি জাহাজ
চলতি পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ - সেন্টমার্টিন নৌপথে প্রায় সময় বন্ধই ছিল জাহাজ চলাচল। অবশেষে দীর্ঘ পাঁচ মাস পর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে এ মৌসুমের প্রথম জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। দুটি জাহাজে চড়ে দুপুর ১২টার দিকে ৬১০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছেছেন।
সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। আজ ১৩ জানুয়ারি এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস জাহাজ ৬১০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা করেছে। আগামীকাল (১৪ জানুয়ারি) বাকি জাহাজগুলোর চলাচল শুরু হবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সকালে টেকনাফ থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ দুটি দুপুর ১২টায় সেন্টমার্টিন জেটিতে এসে পৌঁছেছে।
টেকনাফের নাফ নদীতে নাব্যতা সংকট ও মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষের কারণ দেখিয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে এ নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে প্রশাসন। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা এরপর থেকে জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে ১১ জানুয়ারি বৈঠক করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। পর দিন ১২ জানুয়ারি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ দুটি জাহাজ চালু হয়েছে। পরে অন্য জাহাজগুলো ধাপে ধাপে চালু হবার কথা রয়েছে।
পর্যটকদের সুবিধার্থে টিকিটের মূল্য বিবেচনা করতে জাহাজ মালিকদের অনুরোধ করা হবে জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল।
তিনি বলেন, পর্যটন মৌসুমের মাত্র দুই মাস সময় বাকি আছে। এ সময়ের মধ্যে পর্যটকদের যথার্থ সেবা ও আন্দদ উপভোগের সুযোগ দিতে চাই আমরা। শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অনেক অস্বচ্ছল মানুষ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে আগ্রহী। তাদের কথা মাথায় রেখে এ রুটে জাহাজের টিকিটের মুল্য বিবেচনা করতে মালিক পক্ষকে অনুরোধ করব।
এদিকে দীর্ঘদিন পর জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটকদের মাঝেও আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি তারা।
রাজশাহী থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক দম্পতি শামীম আহসান ও জয়া বলেন, কাজের চাপে বেড়ানোয় তেমন সুযোগ হয়না। আমরা নতুন বিয়ে করেছি,পরিকল্পনা ছিল সেন্টমার্টিনেই আমাদের মধুর কিছু সময় কাটাতে। কিন্তু টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় কক্সবাজার আসা হয়নি আর সেন্টমার্টিনও যাওয়া হলোনা । সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল হবে শুনে তড়িঘড়ি করে কক্সবাজার চলে এলাম। সেন্টমার্টিন যেতে পারবো তাই অনেক ভালো লাগছে।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা পর্যটক শাহরিয়ার কবির বলেন, প্রথমবার সেন্টমার্টিন যাচ্ছি, এবারসহ আমার সেন্টমার্টিনে চতুর্থবার যাওয়া। কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের অধিকাংশই সেন্টমার্টিন না দেখে ফিরেন না। তাই আমার যুক্তিতে মনে হলো, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ ভাড়াটা চাইলে আর একটু কম রাখা যায়। তাহলে পর্যটকরা আরও উৎসাহী হবেন।
এএজেড