বান্দরবানে নব্য জঙ্গি সংগঠনের আরও ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী চলমান অভিযানে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ির দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের অগ্রগতি জানাতে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদ মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযানে ৫ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জঙ্গিদের অবস্থান সনাক্ত করে র্যাব গতকাল রাতে থানচি ও রোয়াংছড়িতে অভিযান পরিচালনা করে এই পাঁচজন জঙ্গিকে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিরা হলেন-নোয়াখালি জেলার সোনাইমুড়ির মুকিল্লা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নিজামুদ্দিন হিরন ওরফে ইউসুফ (৩০), কুমিল্লা জেলার আ. রাজ্জাকের ছেলে সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা (২৭), সিলেট জেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন (৩০), কুমিল্লা জেলার মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. বাইজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াজ ওরফে বাইরু (২১), কুমিল্লা জেলার মো. মজিবুর রহমানের ছেলে ইমরান বিন রহমান শিথিল ওরফে বিল্লাল (১৭)। তাদের মধ্যে ইমরান বিন রহমান শিথিল কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আটজন তরুণের মধ্যে একজন এবং সাদিকুর রহমান সিলেট হতে নিখোঁজ হওয়া চারজন তরুণের মধ্যে একজন। তালিকার ৫৫ জনের মধ্যে এরা সবাই সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে পার্বত্য এলাকায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, গহীন দুর্গম এলাকা। তবে তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। তারা অভিযানের সময় পালিয়ে যায়। তবে এবারের অভিযানে কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, আমাদের অভিযান জঙ্গিবিরোধী অভিযান। পার্বত্য এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষের নূন্যতম ক্ষতি না হয় সেই দিকটি লক্ষ্য রেখে অভিযান পরিচালনা করছি। কত দিনে এ অভিযান শেষ হবে সেটা এখন বলা কঠিন। তবে যাদের গ্রেপ্তার করেছি তাদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পেয়েছি।
র্যাব জানায়, এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মতো কেএনএফের সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ২০০ জনের মতো কেএনএফের সদস্য প্রশিক্ষণ করাচ্ছে-এ রকম তথ্য আমরা পেয়েছি।
তারা আরও জানায়, গত ৮ জানুয়ারি রাতে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। ওই সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলী এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জামসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ২১ অক্টোবর দূর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে সাতজন জঙ্গিসহ তিনজন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক শাখা কুকি ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বিভিন্ন সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পাহাড়ের গোপন আস্তানায় টাকার বিনিময়ে এই প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করেছিল কেএনএফ।
এসআইএইচ