শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

খামারীদের ভাগ্য ও মিল্কভিটার অস্তিত্ব দুটোই জলে!

২০০৫ সাল থেকে রায়পুর মিল্কভিটায় দুধ সরবরার করে আসছিলেন দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারী দিলিপ চন্দ্র ঘোষ। তাঁর পারিবারিক তিনটি খামারে গরু-মহিষ থেকে প্রতি প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার লিটার হারে বছরে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করতেন তিনি। এতে নিজের স্বাবলম্ভীতার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে চরাঞ্চলের কয়েকজন শ্রমিকেরও কর্মসংস্থান। কিন্তু মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন তিনি।

এতে মিল্কভিটা থেকে নেয়া ঋণ ও গো-খাবার সংকট সহ নানা প্রতিকূলতায় লোকসানে পড়ে বাধ্য হয়ে কম দামে গরু বিক্রি করে দিতে হয় তাকে। তাছাড়া গরু মরে এক একটি খামারে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয় তার। দিলিপ চন্দ্র ঘোষ রায়পুর মিল্কভিটার আওতাধিন দেনায়েতপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. এর সভাপতি। এছাড়াও চর কোরালিয়া ও শাকচর নামে দুটি দুগ্ধ উৎপাদক সমবায় সমিতি রয়েছে।

শুধু দিলিপ চন্দ্র ঘোষ-ই-নয়, লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় ৩৮টি প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদকারী সমবায় ইউনিয়ন রয়েছে। প্রতিটি সমবায় ইউনিয়ন এর আওতায় ৩০/৪০জন হারে ৫শতাধিক খামারী উৎপাধিত দুধ মিল্কভিটা সংগ্রহ কেন্দ্রে সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। হঠাৎ করে ২০১৮ সালে ৬ জানুয়ারী রায়পুর মিল্কভিটার দুধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের দুধ সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। শীতলীকরণের অত্যাধুনিক মেশিনটিও গত বছর ফেরত নিয়ে যায় উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষ। এতে খামারীরা সবাই উৎপাদিত দুধ বিক্রি ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েন।

একপর্যায়ে ঋণের ভোজা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে দুধ উৎপাদন ও গরু পালন চেড়েছেন চরাঞ্চলের অধিকাংশ খামারী। এদিকে সমবায় খামারীদের বন্টনের জন্য আনা সোয়া ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ের উন্নত জাতের মহিষ প্রকল্পেও চরম অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় এখন প্রায় বন্ধের পথে রায়পুর মিল্কভিটার দুগ্ধ কেন্দ্রেটি। এতে ব্যস্তে যেতে বসেছে মিল্কভিটার মাধ্যমে চরাঞ্চলের দারিদ্র বিমোচনে সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনা।

অপরদিকে দুধ সংগ্রহ বন্ধ থাকায় এক দিকে খামারীদের কাছ থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ এবং অন্যদিকে খামারীরা মিল্কভিটায় জমাকৃত শেয়ার-সঞ্চয় টাকা ফেরৎ চেয়ে পাল্টা-পাল্টি আইনী নোটিশ চালাচালি করে উভয় পক্ষ। এতে পাওনা নিয়ে সমবায়ী খামারী ও মিল্কভিটার মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব।

জানা যায়, ১৯৯৮ সালে দুধ উৎপাদনকারী খামারী ও কৃষকদের দারিদ্র বিমোচন ও ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করণের লক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মিতালী বাজারে ৫.৪৭ একর এরিয়া নিয়ে দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড নামে দুগ্ধ শীতলীকরণ (ঠান্ডা) ও সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপন করে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ।

এ কেন্দ্রের আওতায় প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় খামারীদের কাছ থেকে নির্ধারীত মূল্যে দুধ ক্রয় করতো মিল্কভিটা। ক্রয়কৃত দুধগুলো ৫হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক শীতলীকরণ মেশিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শেষে ঢাকার মিরপুরে মিল্কভিটার মূল কেন্দ্রে পাঠানো হতো। খামার পরিচালনার জন্য ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকারও অধিক ঋণের পাশাপাশি গবাদিপশুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ ও ঔষধ দেয়া হতো সমবায়দের খামারীদের।

দেনায়েতপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. এর সভাপতি দিলিপ চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাপ্তাহে ৪/৫ লক্ষ টাকার দুধ সরবরাহ করা হতো তার খামারগুলো থেকে। শুরুর দিকে ৩২.৮১ টাকা হারে দুধ ক্রয় করেছে মিল্কভিটা। বাজারে যখন ৫০/৬০ টাকা মূল্য তখনও সর্বোচ্চ ৪০ টাকা, ৪২ টাকা হারেও দুধ সংগ্রহ করতো তারা। দুধ বিক্রির অংশ থেকে পরিবহন ব্যয়, সুধের কিস্তির টাকা, শেয়ার খরিদ ৪০ পয়সা, সঞ্চয় ৬৫ পয়সা ও কমিশন ১ টাকা ধরা হতো। তার একটি খামারে ৩০টি গরু ও ৭০টি মহিষ ছিলো। চরে এখন খালি খামারই রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মিল্কভিটা কার্যক্রম বন্ধ করার পর ঋণের কিস্তি নগদ টাকা নেয়া শুরু করে। গত ২০১৯ সালে হঠাৎ সমবায়ী সমিতিগুলোকে ঋণের সম্পন্ন টাকা পরিশোধ করার জন্য আইনী নোটিশ দেয় মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মিল্কভিটায় সমবায়ী খামারীদের শেয়ার ও সঞ্চয়ের যে পরিমান আমানত জমা রয়েছে, তা বকেয়া ঋণের থেকেও বেশি টাকা, সেগুলো ফেরত দেয়নি মিল্কভিটা।

কাছিয়ার চর দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায়ী সমিতির সভাপতি আবুল গাজী, মালেক গাজী, মো. সোহাগ, মোজাম্মেলসহ আমরা স্ব-স্ব সমিতির পক্ষ থেকেও হাইকোটের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে শেয়ার ও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চেয়ে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষের নিকট আইনী নোটিশ পাঠাই। এর মধ্যে সমবায়ী সমিতির সভাপতি মালেক গাজী ইতোমধ্যে মারা গেছে। তবে এরপরও খামারীদের সঞ্চয়ের টাকা দেয়নি সংশ্লিষ্ট মিল্কভিটার।

রায়পুর মিল্কভিটার এক কর্মকর্তা বলেন, ৩৮টি সমবায় সমিতি মিল্কভিটা থেকে ঋন নিয়ে খামার পরিচালনা করতো। মিল্কভিটায় দুধ দেয়ার মাধ্যমে কিস্তিতে ঋণের টাকা পরিশোধ করতো তারা। দুধ সংগ্রহ বন্ধ হওয়ার পর থেকে লোকসানে পড়ে খামারীরা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনি। এতে খামারীদের কাছ ৬০ লক্ষ টাকা বকেয়া ঋণ পড়ে রয়েছে মিল্কভিটার। এজন্য মিল্কভিটা আইননী নোটিশও করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক একটি সমবায় সমিতি প্রতিদিন গরু-মহিষ থেকে উৎপাদিত কমপক্ষে ৪০০/৫০০ লিটার দুধ শর্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত স্বল্প মূল্যে রায়পুর মিল্কভিটায় সরবরাহ করতো। এতে গড়ে প্রায় ৩ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করতেন সংশ্লিষ্টরা। দুধ সংগ্রহ করে মিল্কভিটা লাভের মুখ দেখলেও, লাভের মুখ দেখেনি খামারীরা। তবে বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে খামারীদের ভাগ্য উন্নয়নের আশ্বাসও দেন কর্তৃপক্ষ। খামারীদের দেয়া সেই আশ্বাস আশ্বাসই রয়ে গেলো।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, সে সময় কারখানা পরিচালনার দায়িত্ব ছিলেন, ডাঃ ফরহাদ হোসেন। অভিযোগ রয়েছে সমবায় খামারীদের নিকট থেকে ক্রয়কৃত দুধের গুণগত মান নিয়ে অহেতুক বির্তক সৃষ্টি করা হতো। এতে খামারীরাও মিল্কভিটায় দুধ দেয়া নিয়ে অনাগ্রহী হয়ে উঠে। মিল্কভিটা চরাঞ্চলের খামারীদের জন্য আশিরবাদ হিসেবে এলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার ও চক্রের ছত্রছায়ায় ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

রায়পুরের চরাঞ্চলের খামারীদের ভাগ্য ফেরাতে শীতলীকরণ মেশিনটি পুনরায় স্থাপন করে বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য নির্ধারন পূর্বক দুধ সংগ্রহ করার দাবী জানান স্থানীয় সচেতন মহল। একই সাথে খামারীদের জমাকৃত সঞ্চয়ের টাকা ফেরতসহ বিনা সুধে ঋণের মাধ্যমে খামারীদের পুনরায় সচল রাখার দাবী করেন তারা।

কাছির চর ও চর কোরালিয়ায় কয়েকজন খামারী জানান, মিল্কভিটা দুধের মূল্য যদিও বাজার থেকেও কম দিতো, সেটি আবার প্রজনন বীজ, চিকিৎসা সেবা, ৫% সুধে ঋণ দিয়ে খামারীরে সহযোগিতা করতো। যা চরাঞ্চলের খামারীদের জন্য আশিরবাদ হিসেবে কাজ করতো। কিন্তু খামারে গরুর অসুস্থ হয়ে পড়লে বার বার অনুরোধ করলে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যেতো না। তাছাড়া ওষধসহ নানাবিদ প্রনোদনা প্রদানেও রয়েছে সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম।

কাজির চর দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মফিজ মিয়া বলেন, দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়ার পর খামারীরা দিশেহারা হয়ে কমে সব গুরু বিক্রি করে দেয়। ডাক্তার ফরহাদ থাকা কালে আমার গরুর ভাইরাস রোগ দেখা দিলে অনুরোধ করেও চিকিৎসা সেবা পাইনি। বিনা চিকিৎসায় আমার ৮টি গরু মারা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সহযোগীতা চেয়েও মিল্কভিটার কৃর্তপক্ষের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাইনি। ওই সময় আমার ১৫ লক্ষ টাকা লোকসান হয়ে।

মিল্কভিটার দুধ সংগ্রহ পুনরায় চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, মিল্কভিটা বড় বড় রাগববোয়ালরা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে আমরা অনিয়মের প্রতিবাদ করে কিছু করতে পারবো না। বড় অফিসাররা যদি বলে তাহলে কার্যক্রম চালু হবে। অন্যথায় খামারীদের ভাগ্য মাটিতে মিশে থাকবে।

চর কাছিয়া সমাবায় সমিতির সভাপতি বলেন, গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে মিল্কভিটা সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকে চিকিৎাসার জন্য অনুরোধ করে কোন সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে আড়াই লক্ষ টাকার গরু মাত্র ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। উল্টো সংশ্লিষ্টরা বলে দুধ সংগ্রহ বন্ধ কিসের চিকিৎসা সেবা।

অপর খামারী বলেন, করোণা কালে ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের প্রনোদনার আওতায় আনা হবে বলে পরিচয়পত্র ও ছবি নিয়ে যায়। কিন্তু করোনার দুই বছর পরও খামারীদের কোন প্রনোদনার আওতায় আনা হয়নি। তবে রাজনীতিক ছত্রছায়ায় এসব প্রনোদনা গায়েব হয়েগেছে বলে জানান ওই খামারী।

উন্নতজাতের মহিষ প্রকল্প:
এদিকে খামারীদের ভাগ্য উন্নেয়নের সোয়া ১৮ কোটি টাকার রায়পুর মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পটি অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় শূন্য অর্জনেই মেয়াদ উত্তির্ণ হয়ে ভেস্তে যাওয়ায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ খামারিদের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহিত প্রকল্পে ব্যাপক সম্ভবনা থাকলেও নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। এতে স্থানীয় ৫ শতাধিক সমবায়ী খামারীদের দেয়া আশ্বাস আশ্বাসই রয়ে গেছে। এসব খামারীদের মাঝে সৃষ্টি হয় চরম ক্ষোভ। তবুও সংশ্লিষ্টরা বলছে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুধ ও মাংসের পাশাপাশি খামারীদের ভাগ্য উন্নয়নের সেই বিশেষ প্রকল্পটি রায়পুর মহিষ উন্নয়ন ও কৃক্রিম প্রজনন প্রকল্প নামে অনুমোদন লাভ করে। সরকারি ৭৫ ভাগ ও মিল্কভিটা সমবায়ীদের ২৫ ভাগ অর্থায়নে ১৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা ব্যায়ের এ প্রকল্পটি ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যস্ত বাস্তবায়নের মেয়াদ কাল ধরা হয়। এর মধ্যে ভারতের থেকে উন্নত মুররাহ্ জাতের ২০০টি গাভী, ২০০টি বাছুর ও ১০টি ষাঁড় মহিষ ক্রয় করে কর্তৃপক্ষ।

ক্রয়কৃত এসব মহিষের বেশির ভাগ স্থানীয় ক্ষুদ্র সমবায়ী খামারীদের মাঝে ভুর্তকি মূল্যে বিতরণ করা ও ষাড় মহিষ থেকে সংগৃহিত বীজ (সীমেন) খামারীদের দেশীয় প্রজাতীর মহিষে সরবরাহ করার কথা ছিলো। যা করা হলে দেশীয় প্রজাতির সাধারণ মহিষ থেকে যেখানে পাওয়া যেত আড়াই থেকে ৩ কেজি দুধ আর প্রজনন উন্নয়নের পর ওই জাতের মহিষ থেকে পাওয়া যেত ৮ থেকে ১০ কেজি দুধ। দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবায়ন, উন্নত খামার প্রতিষ্ঠায় প্রশিক্ষিত খামারীরা বেশ লাভবান হয়ে আগ্রহী হয়ে উঠতো।

রায়পুর কাজির চর দুগ্ধ উৎপাদকারী সমবায় সমিতির কয়েকজন খামারী বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মহিষ গুলো মূলত আনা হয়েছে সমবায়ী খামারীদের বন্টন করার জন্য। কিন্তু এখানকার সংশ্লিষ্টরা কি কারণে মহিষগুলো খামারীদের বন্টন না করে নিজেরাই পালন করা শুরু করেছে।

পরে তারা জানায় সমবায়ীতে দুধ উৎপাদন কম দেখে কর্তৃপক্ষের নিদেশেই তারা নিজেরা রাখাল নিয়োগ করে মহিষ পালন শুরু করে, দুধের ঘাটতি পুরন করার জন্য। কিন্তু উন্নত জাতের মহিষ থেকে উৎপাদিত দুধ দায়িত্বে থাকা ডাঃ ফরহাদ লোভে পড়ে, টাকার বিনিময়ে টেন্ডারের মাধ্যমে মহিষের দুধ বাহিরে বিক্রি করে দেয়। কারখানায় উৎপাদিত মহিষের দুধ যদি সমবায়ের সাথে যোগ করা হতো। তাহলে রায়পুর মিল্কভিটার দুধ সংগ্রহ করণ কার্যক্রম বন্ধ হতো না।

একই কথা জানান খামারী আবুল গাজী, তিনি বলেন, দুধসংগ্রহ বন্ধের পর থেকে জোড়াতালী দিয়ে খামার চালিয়ে যাচ্ছি। গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে আমার খামারও বন্ধের পথে। মিল্কভিটার শীতলীকরণ মেশিন চালু করতে ৩০০ লিটার দুধ লাগে, রায়পুর কারখানায় ৩০০ লিটারেরও বেশি দুধ খামারীদের নিকট থেকে সংগ্রহ হতো।

অথচ মিল্কভিটায় যে মহিষের প্রকল্প রয়েছে সেখানে ২০০ লিটার দুধ হয়। কিন্তু মহিষের দুধ গুলো সংশ্লিষ্টরা লাভের জন্য বাহিরের বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে দেয়। যার জন্য দুধ সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই দায়ী। আর খেসারতও দিতে হয়েছে আমারা সমবায়ী খামারীদের।

তিনি আরও বলেন, কৃষক ও খামারীরা স্বাভলম্বী হওয়ার জন্য ভালো একটি সংস্থা মিল্কভিটা। কিন্তু সংস্থাটিতে কিছু অসাধু কর্মকর্তা সর্বনাশ করে দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে ডা. ফরহাদুল আলম বলেন, আমার বদলি হয়েছে দুই বছর পূর্বে। বর্তমানে খুনলা বিভাগের একটা পদে আছি। রায়পুর মিল্কভিটা কেন্দ্রে একজন প্রজেক্ট ডিরেক্টর (পিডি) ছিলো, স্বার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এতে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। খামারীদের সর্বাত্তক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। যারা স্বার্থ হাসিল করতে পারেনি, তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে বদলি করেছে। আমি কোন অনিমের সাথে জড়িত ছিলাম না।

এদিকে প্রকল্পের আওতায় খামারীদের সেবা দেওয়ার জন্য মিল্কভিটায় ৫টি শেড, একটি বীজাগার মেশিন, একটি গবেষণাগার, প্রজনন মেশিন, আধুনিক নিক্তিসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ স্থাপন করা হয়। কিন্তু সরজমিনে দেখা যায় ৫টি শেডেই রাখা হয়েছে মহিষ।

রায়পুর মিল্কভিটার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ডাঃ আশ্রাফুজ্জামান বলেন, এখনপর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক। কর্তৃপক্ষের নিদেশনা অনুযায়ী উন্নত জাতের মহিষগুলো রাখাল নিয়োগের মাধ্যমে দেখ বাল করা হচ্ছে। তাছাড়া কেন্দ্রের ভেতরেই ঘাস উৎপাদক করা হয় মহিষের জন্য। বিগত ৫বছর পূর্বে ১০০টি মহিষ আনা হয় এ কেন্দ্রে। বর্তমানে গাভী ও চাছুরসহ ১৬৩টি মহিষ আছে মিল্কভিটায়। প্রথমবার ৮০ মহিষ বিক্রি করা হয়েছে। এতে দেড় কোটি টাকা মিল্কভিটার আয় হয়েছে।

দুধ সংগ্রহ বন্ধ ও বকেয়া ঋণ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আশ্রাফুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের নিদেশনা প্রয়োজন। শীতলীকরণ মেশিনের চাহিদা মত দুধ না পাওয়ায় মেশিন নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খামারীরা মিল্কভিটায় দুধের দাম কম দেখে বাজারে মিষ্টির দোকানগুলোতে দেয়। খামারীরা দুধ দিতে চাইলে রামগঞ্জ কেন্দ্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। তবে এখানে উৎপাদিত মহিষের দুধ টেন্ডারের মাধ্যমে বাহিরে বিক্রি করে রাজস্ব আয় হয়।
এএজেড

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান