শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ | ১ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

খামারীদের ভাগ্য ও মিল্কভিটার অস্তিত্ব দুটোই জলে!

২০০৫ সাল থেকে রায়পুর মিল্কভিটায় দুধ সরবরার করে আসছিলেন দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারী দিলিপ চন্দ্র ঘোষ। তাঁর পারিবারিক তিনটি খামারে গরু-মহিষ থেকে প্রতি প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার লিটার হারে বছরে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করতেন তিনি। এতে নিজের স্বাবলম্ভীতার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে চরাঞ্চলের কয়েকজন শ্রমিকেরও কর্মসংস্থান। কিন্তু মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন তিনি।

এতে মিল্কভিটা থেকে নেয়া ঋণ ও গো-খাবার সংকট সহ নানা প্রতিকূলতায় লোকসানে পড়ে বাধ্য হয়ে কম দামে গরু বিক্রি করে দিতে হয় তাকে। তাছাড়া গরু মরে এক একটি খামারে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয় তার। দিলিপ চন্দ্র ঘোষ রায়পুর মিল্কভিটার আওতাধিন দেনায়েতপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. এর সভাপতি। এছাড়াও চর কোরালিয়া ও শাকচর নামে দুটি দুগ্ধ উৎপাদক সমবায় সমিতি রয়েছে।

শুধু দিলিপ চন্দ্র ঘোষ-ই-নয়, লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় ৩৮টি প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদকারী সমবায় ইউনিয়ন রয়েছে। প্রতিটি সমবায় ইউনিয়ন এর আওতায় ৩০/৪০জন হারে ৫শতাধিক খামারী উৎপাধিত দুধ মিল্কভিটা সংগ্রহ কেন্দ্রে সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। হঠাৎ করে ২০১৮ সালে ৬ জানুয়ারী রায়পুর মিল্কভিটার দুধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের দুধ সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। শীতলীকরণের অত্যাধুনিক মেশিনটিও গত বছর ফেরত নিয়ে যায় উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষ। এতে খামারীরা সবাই উৎপাদিত দুধ বিক্রি ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েন।

একপর্যায়ে ঋণের ভোজা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে দুধ উৎপাদন ও গরু পালন চেড়েছেন চরাঞ্চলের অধিকাংশ খামারী। এদিকে সমবায় খামারীদের বন্টনের জন্য আনা সোয়া ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ের উন্নত জাতের মহিষ প্রকল্পেও চরম অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় এখন প্রায় বন্ধের পথে রায়পুর মিল্কভিটার দুগ্ধ কেন্দ্রেটি। এতে ব্যস্তে যেতে বসেছে মিল্কভিটার মাধ্যমে চরাঞ্চলের দারিদ্র বিমোচনে সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনা।

অপরদিকে দুধ সংগ্রহ বন্ধ থাকায় এক দিকে খামারীদের কাছ থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ এবং অন্যদিকে খামারীরা মিল্কভিটায় জমাকৃত শেয়ার-সঞ্চয় টাকা ফেরৎ চেয়ে পাল্টা-পাল্টি আইনী নোটিশ চালাচালি করে উভয় পক্ষ। এতে পাওনা নিয়ে সমবায়ী খামারী ও মিল্কভিটার মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব।

জানা যায়, ১৯৯৮ সালে দুধ উৎপাদনকারী খামারী ও কৃষকদের দারিদ্র বিমোচন ও ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করণের লক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মিতালী বাজারে ৫.৪৭ একর এরিয়া নিয়ে দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড নামে দুগ্ধ শীতলীকরণ (ঠান্ডা) ও সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপন করে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ।

এ কেন্দ্রের আওতায় প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় খামারীদের কাছ থেকে নির্ধারীত মূল্যে দুধ ক্রয় করতো মিল্কভিটা। ক্রয়কৃত দুধগুলো ৫হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক শীতলীকরণ মেশিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শেষে ঢাকার মিরপুরে মিল্কভিটার মূল কেন্দ্রে পাঠানো হতো। খামার পরিচালনার জন্য ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকারও অধিক ঋণের পাশাপাশি গবাদিপশুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ ও ঔষধ দেয়া হতো সমবায়দের খামারীদের।

দেনায়েতপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. এর সভাপতি দিলিপ চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাপ্তাহে ৪/৫ লক্ষ টাকার দুধ সরবরাহ করা হতো তার খামারগুলো থেকে। শুরুর দিকে ৩২.৮১ টাকা হারে দুধ ক্রয় করেছে মিল্কভিটা। বাজারে যখন ৫০/৬০ টাকা মূল্য তখনও সর্বোচ্চ ৪০ টাকা, ৪২ টাকা হারেও দুধ সংগ্রহ করতো তারা। দুধ বিক্রির অংশ থেকে পরিবহন ব্যয়, সুধের কিস্তির টাকা, শেয়ার খরিদ ৪০ পয়সা, সঞ্চয় ৬৫ পয়সা ও কমিশন ১ টাকা ধরা হতো। তার একটি খামারে ৩০টি গরু ও ৭০টি মহিষ ছিলো। চরে এখন খালি খামারই রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মিল্কভিটা কার্যক্রম বন্ধ করার পর ঋণের কিস্তি নগদ টাকা নেয়া শুরু করে। গত ২০১৯ সালে হঠাৎ সমবায়ী সমিতিগুলোকে ঋণের সম্পন্ন টাকা পরিশোধ করার জন্য আইনী নোটিশ দেয় মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মিল্কভিটায় সমবায়ী খামারীদের শেয়ার ও সঞ্চয়ের যে পরিমান আমানত জমা রয়েছে, তা বকেয়া ঋণের থেকেও বেশি টাকা, সেগুলো ফেরত দেয়নি মিল্কভিটা।

কাছিয়ার চর দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায়ী সমিতির সভাপতি আবুল গাজী, মালেক গাজী, মো. সোহাগ, মোজাম্মেলসহ আমরা স্ব-স্ব সমিতির পক্ষ থেকেও হাইকোটের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে শেয়ার ও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চেয়ে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষের নিকট আইনী নোটিশ পাঠাই। এর মধ্যে সমবায়ী সমিতির সভাপতি মালেক গাজী ইতোমধ্যে মারা গেছে। তবে এরপরও খামারীদের সঞ্চয়ের টাকা দেয়নি সংশ্লিষ্ট মিল্কভিটার।

রায়পুর মিল্কভিটার এক কর্মকর্তা বলেন, ৩৮টি সমবায় সমিতি মিল্কভিটা থেকে ঋন নিয়ে খামার পরিচালনা করতো। মিল্কভিটায় দুধ দেয়ার মাধ্যমে কিস্তিতে ঋণের টাকা পরিশোধ করতো তারা। দুধ সংগ্রহ বন্ধ হওয়ার পর থেকে লোকসানে পড়ে খামারীরা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনি। এতে খামারীদের কাছ ৬০ লক্ষ টাকা বকেয়া ঋণ পড়ে রয়েছে মিল্কভিটার। এজন্য মিল্কভিটা আইননী নোটিশও করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক একটি সমবায় সমিতি প্রতিদিন গরু-মহিষ থেকে উৎপাদিত কমপক্ষে ৪০০/৫০০ লিটার দুধ শর্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত স্বল্প মূল্যে রায়পুর মিল্কভিটায় সরবরাহ করতো। এতে গড়ে প্রায় ৩ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করতেন সংশ্লিষ্টরা। দুধ সংগ্রহ করে মিল্কভিটা লাভের মুখ দেখলেও, লাভের মুখ দেখেনি খামারীরা। তবে বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে খামারীদের ভাগ্য উন্নয়নের আশ্বাসও দেন কর্তৃপক্ষ। খামারীদের দেয়া সেই আশ্বাস আশ্বাসই রয়ে গেলো।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, সে সময় কারখানা পরিচালনার দায়িত্ব ছিলেন, ডাঃ ফরহাদ হোসেন। অভিযোগ রয়েছে সমবায় খামারীদের নিকট থেকে ক্রয়কৃত দুধের গুণগত মান নিয়ে অহেতুক বির্তক সৃষ্টি করা হতো। এতে খামারীরাও মিল্কভিটায় দুধ দেয়া নিয়ে অনাগ্রহী হয়ে উঠে। মিল্কভিটা চরাঞ্চলের খামারীদের জন্য আশিরবাদ হিসেবে এলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার ও চক্রের ছত্রছায়ায় ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

রায়পুরের চরাঞ্চলের খামারীদের ভাগ্য ফেরাতে শীতলীকরণ মেশিনটি পুনরায় স্থাপন করে বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য নির্ধারন পূর্বক দুধ সংগ্রহ করার দাবী জানান স্থানীয় সচেতন মহল। একই সাথে খামারীদের জমাকৃত সঞ্চয়ের টাকা ফেরতসহ বিনা সুধে ঋণের মাধ্যমে খামারীদের পুনরায় সচল রাখার দাবী করেন তারা।

কাছির চর ও চর কোরালিয়ায় কয়েকজন খামারী জানান, মিল্কভিটা দুধের মূল্য যদিও বাজার থেকেও কম দিতো, সেটি আবার প্রজনন বীজ, চিকিৎসা সেবা, ৫% সুধে ঋণ দিয়ে খামারীরে সহযোগিতা করতো। যা চরাঞ্চলের খামারীদের জন্য আশিরবাদ হিসেবে কাজ করতো। কিন্তু খামারে গরুর অসুস্থ হয়ে পড়লে বার বার অনুরোধ করলে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যেতো না। তাছাড়া ওষধসহ নানাবিদ প্রনোদনা প্রদানেও রয়েছে সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম।

কাজির চর দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মফিজ মিয়া বলেন, দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়ার পর খামারীরা দিশেহারা হয়ে কমে সব গুরু বিক্রি করে দেয়। ডাক্তার ফরহাদ থাকা কালে আমার গরুর ভাইরাস রোগ দেখা দিলে অনুরোধ করেও চিকিৎসা সেবা পাইনি। বিনা চিকিৎসায় আমার ৮টি গরু মারা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সহযোগীতা চেয়েও মিল্কভিটার কৃর্তপক্ষের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাইনি। ওই সময় আমার ১৫ লক্ষ টাকা লোকসান হয়ে।

মিল্কভিটার দুধ সংগ্রহ পুনরায় চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, মিল্কভিটা বড় বড় রাগববোয়ালরা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে আমরা অনিয়মের প্রতিবাদ করে কিছু করতে পারবো না। বড় অফিসাররা যদি বলে তাহলে কার্যক্রম চালু হবে। অন্যথায় খামারীদের ভাগ্য মাটিতে মিশে থাকবে।

চর কাছিয়া সমাবায় সমিতির সভাপতি বলেন, গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে মিল্কভিটা সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকে চিকিৎাসার জন্য অনুরোধ করে কোন সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে আড়াই লক্ষ টাকার গরু মাত্র ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। উল্টো সংশ্লিষ্টরা বলে দুধ সংগ্রহ বন্ধ কিসের চিকিৎসা সেবা।

অপর খামারী বলেন, করোণা কালে ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের প্রনোদনার আওতায় আনা হবে বলে পরিচয়পত্র ও ছবি নিয়ে যায়। কিন্তু করোনার দুই বছর পরও খামারীদের কোন প্রনোদনার আওতায় আনা হয়নি। তবে রাজনীতিক ছত্রছায়ায় এসব প্রনোদনা গায়েব হয়েগেছে বলে জানান ওই খামারী।

উন্নতজাতের মহিষ প্রকল্প:
এদিকে খামারীদের ভাগ্য উন্নেয়নের সোয়া ১৮ কোটি টাকার রায়পুর মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পটি অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় শূন্য অর্জনেই মেয়াদ উত্তির্ণ হয়ে ভেস্তে যাওয়ায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ খামারিদের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহিত প্রকল্পে ব্যাপক সম্ভবনা থাকলেও নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। এতে স্থানীয় ৫ শতাধিক সমবায়ী খামারীদের দেয়া আশ্বাস আশ্বাসই রয়ে গেছে। এসব খামারীদের মাঝে সৃষ্টি হয় চরম ক্ষোভ। তবুও সংশ্লিষ্টরা বলছে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুধ ও মাংসের পাশাপাশি খামারীদের ভাগ্য উন্নয়নের সেই বিশেষ প্রকল্পটি রায়পুর মহিষ উন্নয়ন ও কৃক্রিম প্রজনন প্রকল্প নামে অনুমোদন লাভ করে। সরকারি ৭৫ ভাগ ও মিল্কভিটা সমবায়ীদের ২৫ ভাগ অর্থায়নে ১৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা ব্যায়ের এ প্রকল্পটি ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যস্ত বাস্তবায়নের মেয়াদ কাল ধরা হয়। এর মধ্যে ভারতের থেকে উন্নত মুররাহ্ জাতের ২০০টি গাভী, ২০০টি বাছুর ও ১০টি ষাঁড় মহিষ ক্রয় করে কর্তৃপক্ষ।

ক্রয়কৃত এসব মহিষের বেশির ভাগ স্থানীয় ক্ষুদ্র সমবায়ী খামারীদের মাঝে ভুর্তকি মূল্যে বিতরণ করা ও ষাড় মহিষ থেকে সংগৃহিত বীজ (সীমেন) খামারীদের দেশীয় প্রজাতীর মহিষে সরবরাহ করার কথা ছিলো। যা করা হলে দেশীয় প্রজাতির সাধারণ মহিষ থেকে যেখানে পাওয়া যেত আড়াই থেকে ৩ কেজি দুধ আর প্রজনন উন্নয়নের পর ওই জাতের মহিষ থেকে পাওয়া যেত ৮ থেকে ১০ কেজি দুধ। দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবায়ন, উন্নত খামার প্রতিষ্ঠায় প্রশিক্ষিত খামারীরা বেশ লাভবান হয়ে আগ্রহী হয়ে উঠতো।

রায়পুর কাজির চর দুগ্ধ উৎপাদকারী সমবায় সমিতির কয়েকজন খামারী বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মহিষ গুলো মূলত আনা হয়েছে সমবায়ী খামারীদের বন্টন করার জন্য। কিন্তু এখানকার সংশ্লিষ্টরা কি কারণে মহিষগুলো খামারীদের বন্টন না করে নিজেরাই পালন করা শুরু করেছে।

পরে তারা জানায় সমবায়ীতে দুধ উৎপাদন কম দেখে কর্তৃপক্ষের নিদেশেই তারা নিজেরা রাখাল নিয়োগ করে মহিষ পালন শুরু করে, দুধের ঘাটতি পুরন করার জন্য। কিন্তু উন্নত জাতের মহিষ থেকে উৎপাদিত দুধ দায়িত্বে থাকা ডাঃ ফরহাদ লোভে পড়ে, টাকার বিনিময়ে টেন্ডারের মাধ্যমে মহিষের দুধ বাহিরে বিক্রি করে দেয়। কারখানায় উৎপাদিত মহিষের দুধ যদি সমবায়ের সাথে যোগ করা হতো। তাহলে রায়পুর মিল্কভিটার দুধ সংগ্রহ করণ কার্যক্রম বন্ধ হতো না।

একই কথা জানান খামারী আবুল গাজী, তিনি বলেন, দুধসংগ্রহ বন্ধের পর থেকে জোড়াতালী দিয়ে খামার চালিয়ে যাচ্ছি। গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে আমার খামারও বন্ধের পথে। মিল্কভিটার শীতলীকরণ মেশিন চালু করতে ৩০০ লিটার দুধ লাগে, রায়পুর কারখানায় ৩০০ লিটারেরও বেশি দুধ খামারীদের নিকট থেকে সংগ্রহ হতো।

অথচ মিল্কভিটায় যে মহিষের প্রকল্প রয়েছে সেখানে ২০০ লিটার দুধ হয়। কিন্তু মহিষের দুধ গুলো সংশ্লিষ্টরা লাভের জন্য বাহিরের বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে দেয়। যার জন্য দুধ সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই দায়ী। আর খেসারতও দিতে হয়েছে আমারা সমবায়ী খামারীদের।

তিনি আরও বলেন, কৃষক ও খামারীরা স্বাভলম্বী হওয়ার জন্য ভালো একটি সংস্থা মিল্কভিটা। কিন্তু সংস্থাটিতে কিছু অসাধু কর্মকর্তা সর্বনাশ করে দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে ডা. ফরহাদুল আলম বলেন, আমার বদলি হয়েছে দুই বছর পূর্বে। বর্তমানে খুনলা বিভাগের একটা পদে আছি। রায়পুর মিল্কভিটা কেন্দ্রে একজন প্রজেক্ট ডিরেক্টর (পিডি) ছিলো, স্বার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এতে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। খামারীদের সর্বাত্তক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। যারা স্বার্থ হাসিল করতে পারেনি, তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে বদলি করেছে। আমি কোন অনিমের সাথে জড়িত ছিলাম না।

এদিকে প্রকল্পের আওতায় খামারীদের সেবা দেওয়ার জন্য মিল্কভিটায় ৫টি শেড, একটি বীজাগার মেশিন, একটি গবেষণাগার, প্রজনন মেশিন, আধুনিক নিক্তিসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ স্থাপন করা হয়। কিন্তু সরজমিনে দেখা যায় ৫টি শেডেই রাখা হয়েছে মহিষ।

রায়পুর মিল্কভিটার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ডাঃ আশ্রাফুজ্জামান বলেন, এখনপর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক। কর্তৃপক্ষের নিদেশনা অনুযায়ী উন্নত জাতের মহিষগুলো রাখাল নিয়োগের মাধ্যমে দেখ বাল করা হচ্ছে। তাছাড়া কেন্দ্রের ভেতরেই ঘাস উৎপাদক করা হয় মহিষের জন্য। বিগত ৫বছর পূর্বে ১০০টি মহিষ আনা হয় এ কেন্দ্রে। বর্তমানে গাভী ও চাছুরসহ ১৬৩টি মহিষ আছে মিল্কভিটায়। প্রথমবার ৮০ মহিষ বিক্রি করা হয়েছে। এতে দেড় কোটি টাকা মিল্কভিটার আয় হয়েছে।

দুধ সংগ্রহ বন্ধ ও বকেয়া ঋণ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আশ্রাফুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের নিদেশনা প্রয়োজন। শীতলীকরণ মেশিনের চাহিদা মত দুধ না পাওয়ায় মেশিন নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খামারীরা মিল্কভিটায় দুধের দাম কম দেখে বাজারে মিষ্টির দোকানগুলোতে দেয়। খামারীরা দুধ দিতে চাইলে রামগঞ্জ কেন্দ্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। তবে এখানে উৎপাদিত মহিষের দুধ টেন্ডারের মাধ্যমে বাহিরে বিক্রি করে রাজস্ব আয় হয়।
এএজেড

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা

ভেজাল শিশু খাদ্য ধ্বংস। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকিতে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, শিশু খাদ্য ও বেকারী পণ্য সংক্রান্ত তদারকি কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান জানান, মেসার্স কালাম স্টোরের মালিক আবুল কালামকে কোমল পানি উৎপাদন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এবং কেনা সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকার কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৭ ও ৪৫ অনুসারে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অপরদিকে, মেসার্স গাউছিয়া ফুডের মালিক হাফিজুর রহমানকে বেকারী পণ্য অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সংরক্ষণ এবং নিম্নমানের সুগন্ধী ব্যবহার করার জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৪৩ অনুসারে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এসময়, ১৫০ বস্তা কোমল পানি জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। তদারকি কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানসম্মত পরিচ্ছন্ন পরিবেশে পণ্য তৈরী ও সংরক্ষণ এবং অনুমোদিত পানীয় ও শিশু খাদ্য বিক্রি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।

তদারকি কার্যক্রমে ক্যাবের সদস্য রফিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশের একটি দল সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

Header Ad
Header Ad

সহকর্মীর সঙ্গে প্রেম, যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরী

ছবি: সংগৃহীত

‘প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস-/তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।।’এই ‘সর্বনাশ’কে যে কখন কার চোখে দেখে বসেন, আগেভাগে তা নির্ণয় করা কঠিন।

একইভাবে ‘প্রেম একবারই এসেছিলো নীরবে’ গানের ‘একবার’টা যে কার জীবনে কখন কীভাবে চলে আসে, সেই হিসাবও মেলে না সহজে। স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে গিয়েও সহকর্মীর চোখে ‘সর্বনাশ’দেখতে পারেন কেউ। মনে হতে পারে, ‘লাগবে, তাকে আমার লাগবে। সে ছাড়া আর কিছু চাইনে।’ সহকর্মীকে ‘ভালোলাগা’র কারণও রয়েছে প্রচুর। কর্মক্ষেত্রে কাটাতে হয় দিনের একটা দীর্ঘ সময়। মিলেমিশে কাজ করতে হয়। যে কারণে একে অপরকে জানার সুযোগও তৈরি হয়। বিশেষ কোনো গুণ বা আচার-ব্যবহার কিংবা স্রেফ ভালোলাগার কারণেই ভালোলাগা; আর ভালোলাগা থেকে মায়া তৈরি হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের অনেক সুবিধার কথাও অনেকে বলে থাকেন। তবে সুবিধা যার আছে, তার কিছু অসুবিধাও থাকে। তাই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে পারলে অসুবিধাগুলো এড়ানো সহজ হয়।

আচরণে সংযম

কথায় বলে, ‘যত থাকে গুপ্ত/ তত হয় পোক্ত/ যত হয় ব্যক্ত/ তত হয় ত্যক্ত।’ তাই ফলাও করে সম্পর্কের কথা জানান দেওয়া কিংবা স্যোশাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করে নানা অনুভূতি ব্যক্ত করার চেয়ে বিষয়টা নিজেদের মধ্যে রাখতে পারাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, পরে দেখা গেল, কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা টানাপোড়েনের সৃষ্টি হলো, তখন অফিসে সহকর্মীদের সামনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। তা ছাড়া সম্পর্কের বিষয়টা অফিসে অনেকে জানলে ভালোর চেয়ে মন্দ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। বিশেষ করে ফিসফাস, কানাকানি, সমালোচনা ‍ও গুজবের মধ্যে পড়ারও আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই সম্পর্কের বিষয়টা নিজেদের মধ্যে রাখতে পারলে অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সহকর্মীদের কাছে এসব বিষয় গোপন রাখা কঠিন। তাই ফলাও করে না বললেই নিস্তার মিলল, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। নিজেদের আচার-আচরণ, চলাফেরা এমনকি কথাবার্তাতেও ব্যাপারটা যেন ফুটে না ওঠে, সেদিকে যেমন দৃষ্টি রাখতে হবে, তেমনই পেশাদার আচরণও বজায় রাখতে হবে।

অফিসের নিয়ম জানুন

ভালোবাসার মতো ভালোবাসলে নিয়মকানুন পথ আটকাতে পারে না। না, কথায় কোনো ভুল নেই। তবে সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে চাকরি হারানোর ঝুঁকিও কিন্তু উপেক্ষা করা যায় না। প্রশ্ন করতে পারেন, চাকরি হারানোর ঝুঁকি, কীভাবে? প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট চাকরিবিধি আছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক অনুমোদন করে না। কেন করে না? ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’। কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই স্বার্থ–সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। রয়েছে পদোন্নতি, প্রণোদনাসহ নানা প্রত্যাশা। সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে বা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে বিষয়গুলো নানাভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাহলে উপায়? ভালোলাগা, ভালোবাসা তো আর পরিকল্পনা করে হয় না। স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়ে যায়। তাই প্রতিষ্ঠানের চাকরিবিধির নিয়ম জেনে নিতে হবে। যদি কোনো সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ না থাকে, তাহলে চিন্তা রইল না। আর বিধিনিষেধ থাকলে সে ক্ষেত্রে যেকোনো একজনকে যত দ্রুত সম্ভব অন্যত্র চাকরির চেষ্টা করতে হবে।

 প্রেম ভেঙে গেলে

‘ব্রেকআপের ঝুঁকি’ সম্পর্কেও পূর্ণ ভাবনা থাকা জরুরি। কোনো কারণে সম্পর্ক ভেঙে গেলে সম্বোধন যেন ‘তুমি’ থেকে ‘তুই’তে গিয়ে না ঠেকে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কারণ, বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হলে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হবে। পাশাপাশি সহকর্মীদের কাছে নিজেদের সম্মান হারানোরও ঝুঁকি দেখা দেবে।

কখন জানবেন সহকর্মীরা

দেখা গেল, সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কোনো লিখিত বা স্বীকৃত বিধিনিষেধ নেই এবং দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে ঠিকও হয়ে গেল। কার্ডও ছাপানো হলো। কিন্তু এ পর্যন্ত অফিসের কেউ কিছু জানেন না। দুজনে বিয়ের কার্ড নিয়ে অফিসের বস, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সহকর্মীদের হাতে দিয়ে বললেন, ‘সবাইকে কিন্তু আসতে হবে।’ ভুল করেও কিন্তু এটা করা যাবে না। কারণ, এটা করলে বিশ্বস্ততা কমে যায়। এমনকি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, বস ও সহকর্মীরা বিষয়টা ভিন্নভাবে নাও নিতে পারেন, যা পরবর্তী সময় প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করার ক্ষেত্রে ভালো ফল বয়ে আনবে না। তাই এ জটিলতা এড়াতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কিছুদিন সময় নিয়ে বুদ্ধিদীপ্তভাবে সহকর্মীদের সম্পর্কের বিষয়টা জানাতে হবে। তারপর বিয়ের কার্ড দিয়ে দাওয়াত দিতে হবে। এতে তারা যেমন খুশি হবেন, তেমনই বিষয়টা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করবেন।

Header Ad
Header Ad

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন ধর্ষক হিটু শেখ

শিশু আছিয়ার ধর্ষক হিটু শেখ। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ধর্ষক হিটু শেখ। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে আসামি হিটু শেখ উপস্থিত হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে শিশু আছিয়ার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে নেয়া হয় নিজ গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এশার নামাজের পর শ্রীপুরের সোনাইকুণ্ডীতে তাকে দাফন করা হয়।

এর পরপরই অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড়িটিতে আগুন দেয়া হয়। ওইদিন দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যায় শিশুটি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

গত সোমবার (১০ মার্চ) মাগুরায় ৮ বছরের এ শিশুটি ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি হিটু শেখের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া বাকি ৩ আসামির প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ড দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হয় আট বছরের শিশুটি। বোনের শ্বশুর তাকে ধর্ষণ করে বলে জানায় শিশুটি। ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার বোনের অভিযোগ, গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরও তাকে চিকিৎসার জন্য না নিয়ে উল্টো ঘরের ভেতরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।

পরদিন ৬ মার্চ সকালে প্রতিবেশী এক নারী তাদের ঘরে এলে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। এরপর শিশুটিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। ততক্ষণে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। হাসপাতালে গিয়ে বোনের শাশুড়ি চিকিৎসকদের জানান, শিশুটিকে জ্বিনে ধরেছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বিষয়টি টের পেয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান বোনের শাশুড়ি।

ওইদিন দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সেদিন রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঢাকা মেডিকেলে দুইদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা
সহকর্মীর সঙ্গে প্রেম, যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরী
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন ধর্ষক হিটু শেখ
স্ত্রী,সন্তানসহ ৯ সফরসঙ্গী নিয়ে ঢাকা আসছেন হামজা, বরণে প্রস্তুত বাফুফে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু
বিরামপুরে মাদকসহ ১৬ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ, আটক ১
প্রাথমিকের শূন্যপদে নিয়োগ শিগগিরই
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন বিএনপি মহাসচিব
গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বৃদ্ধ আটক
রাজশাহী স্টেশনে ধুমকেতু ও বাংলাবান্ধা ট্রেনের সংঘর্ষ
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ হলে চাল সরবরাহ বন্ধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
দেশে তিন মাসেই কোটিপতি হয়েছেন ৫ হাজার
পাকিস্তান থেকে এলো ২৬ হাজার টন আতপ চাল
বাংলাদেশের সংকটে পাশে থাকার ঘোষণা জাতিসংঘ মহাসচিবের
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে এক দিনের ছুটি ঘোষণা  
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল
ট্রাম্পের অনুরোধের পর ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান পুতিনের
এক বছর পর ব্রাজিল জাতীয় দলে ডাক পেয়েই আবার ইনজুরিতে নেইমার
আমাকে কাজের বিনিময়ে শোয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে: অভিনেত্রী স্বাগতা
শিশু ধর্ষণ মামলায় জামিন নিতে এসে অভিযুক্ত কারাগারে