মহেশখালীতে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ, নিরব প্রশাসন

কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের মৌলভীকাটা এলাকায় সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও নিরব ভূমিকায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদ মেম্বার, জালাল মাস্টার ও সালাম মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে সরকারি উঁচু টিলা জায়গা থেকে মাটি বিক্রি করছে।
আরও জানা গেছে, মৌলভীকাটা এলাকার ইউপি সদস্য ফরিদুল আলমের নেতৃত্বে একদল পাহাড় খেকো প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটছে। গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সারারাত চলে মাটি কাটার মহোৎসব। এতে করে সরকারি জমি হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমি ধ্বংসের আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাপলাপুর ইউনিয়নের (৪ নম্বর ওয়ার্ড) মৌলভীকাটা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি উঁচু টিলা থেকে কয়েকটি স্কেভেটর-ডাম্পার দিয়ে মাটি কাটছে একদল পাহাড় খেকো। মাটি কেটে ডাম্পার বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে এবং বিক্রি করা হচ্ছে নির্মাণাধীন বাড়িতে। উক্ত জায়গায় দালান তৈরি ও দোকান নির্মাণের জন্য জায়গা ভরাট করা হচ্ছে পাহাড়ের মাটি দিয়ে ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহরিয়ার বলেন, মাটি কাটার কারণে আমাদের বসতভিটার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হওয়ার আশঙ্কা করছি। সামনে বর্ষার মৌসুমে এর ফল আমাদের ভোগ করতে হবে। ফরিদ মেম্বার কয়েকদিন আগেও স্কেভেটর নিয়ে এই জায়গায় মাটি বিক্রি করার জন্য এসেছিল। শাপলাপুর বিট অফিসার এসে বাধা দিলে সে চলে যায়। এর কয়েকদিন পর আবার স্কেভেটর-ডাম্পার নিয়ে রাত-দিন মাটি কাটে তার নেতৃত্বে একটি দল।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, শাপলাপুর ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদ মেম্বারের কাজ হচ্ছে উঁচু জায়গায় যারা বসবাস করছে তাদের ভিটা নিচু করার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাটিগুলো বিক্রি করা। আর মাটি কাটার টাকায় ভাগ বসিয়ে হারামকে হালাল করাই তার কাজ।
এদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম বলেন, মাটি কাটার সঙ্গে আমি জড়িত নয়। স্থানীয়রা মসজিদ তৈরি করার জন্য এই মাটি কাটছে। আমার ব্যাপারে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে ।
এ ব্যাপারে মহেশখালী রেঞ্জের কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, মাটি কাটার বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি। যে জায়গায় যারা মাটি কাটছে তা তাদের ব্যক্তিগত জায়গা। এখানে বন বিভাগের কিছুই করার নেই।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে আমিসহ বন বিভাগের লোকজন দৌড়ের উপর ছিলাম। মাটি কাটার স্থানে গিয়ে মাটি কাটা বন্ধও রাখা হয়। পরে শুক্রবার সার্ভেয়ারের মাধ্যমে অবগত হই, যে স্থান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে তা তাদের নিজস্ব খতিয়ানভুক্ত জমি। একটি মসজিদ তৈরির কাজে উক্ত জায়গায় মাটি ভরাট করা হচ্ছে। ধর্মীয় বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা বিষয়টি নিয়ে আর আগাইনি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে মেম্বার ফরিদুল আলমকে মাটি কাটার স্থান থেকে আটক করে মহেশখালী থানায় প্রায় তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এসআইএইচ
