৬ লাখ পর্যটকে টইটম্বুর কক্সবাজার সৈকত
টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেশি-বিদেশি পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ৩ দিনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজার সৈকতে ছুটে আসেন প্রায় ৬ লাখ ভ্রমণপ্রিয় মানুষ।
রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে বড়দিনসহ ৩ দিনের ছুটি। ছুটির শেষ দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
এদিন বিকালে সৈকতের লাবনী, কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, সৈকতের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুধু পর্যটক আর পর্যটক। এসব পর্যটকরা শীতের মিষ্টি রোদে বালিয়াড়িতে ছোটাছুটি করছেন। আবার কেউবা সমুদ্রের লোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক কাদের চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নাম শুনলেই ভালো লাগে। আর এখানে এসে সমুদ্রের লোনা জলে স্নানের আনন্দ কেমন সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে এখন অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে। যেসব জায়গায় গেলে মন ভালো হয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক শরীফ মিয়া বলেন, পরিবারের সঙ্গে এসেছি। সবাই খুব মজা করছে। বরাবরের মতোই প্রকৃতির টানে আমাদের কক্সবাজার চলে আসা।
আরেক পর্যটক শাহরিয়ার কবির বলেন, কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসহ সব পর্যটন কেন্দ্র দেখতে খুবই চমৎকার, তবে এখানে হোটেল রুম ভাড়া ও খাবারের দাম বেশি হওয়ায় পর্যটকদের কাছে ধীরে ধীরে বিরক্তির কারণ হতে পারে।
সৈকতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সি সেফ লাইফ গার্ডের সদস্য ওসমান বলেন, সমুদ্রপাড়ে সকাল থেকে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। বাড়তি পর্যটকের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে লাইফগার্ড সদস্যরা। সৈকতে নিরাপত্তা নিয়ে ঘাটতি নেই। সমুদ্রে গোসল করতে গিয়ে যাতে কোনো দুর্ঘটনায় পড়তে না হয় সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রয়েছে।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ৩ দিনের টানা ছুটির শেষ দিন আজ। এই ৩ দিনে কক্সবাজারে প্রায় ৬ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকবে। কক্সবাজারে ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। অতিরিক্ত পর্যটক আগমনের কারণে কিছু পর্যটক রুম পায়নি এ ধরনের তথ্যও রয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুর বলেন, স্বাভাবিকভাবে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ টহল বাড়িয়েছে। পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে নজরদারি করা হচ্ছে। পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, পর্যটক হয়রানি রোধ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক টিম। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এসজি