৫৪ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিলে শিক্ষক-অভিভাবকদের হাতাহাতি

লটারির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ছাত্রদের নাম বাদ পড়ার জেরে বগুড়া জেলা স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বগুড়া জেলা স্কুল সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি একযোগে দেশের সব সরকারি বিদ্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ওইদিন বিকাল ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয় অনলাইনে ও স্কুলের নোটিশ বোর্ডে। একই শিক্ষার্থীর নাম ভর্তি তালিকায় একাধিকবার পাওয়া যায় ৷ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা আবেদন প্রক্রিয়ায় কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে একাধিকবার আবেদন করায় এমনটি ঘটে বলে জানা যায়। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) নির্দেশ দেয় একাধিকবার আবেদন করা শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে না।
মাউশির এমন নির্দেশনার পর ভর্তি প্রক্রিয়া পর্ব চুড়ান্ত করতে বগুড়া জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থীদের আবেদন ও কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই শুরু করে। এ সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ ওইদিনই ৫৪ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিলের তালিকা প্রকাশ করে। একাধিকবার আবেদন এবং আবেদনের সাথে জন্ম নিবন্ধনের মিল না থাকা ও অনলাইন জন্ম নিবন্ধন না থাকায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়।
এ ঘটনার জেরে বুধবার সকাল ১১টায় প্রায় ২০ জন নারী ও পুরুষ অভিভাবক জেলা স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে আসেন। এ সময় অভিভাবকরা শিক্ষদের উপর চড়াও হয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় স্কুলের দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলম ও প্রভাতি শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার ইসলাম হেনস্তার শিকার হন।
একাধিকবার আবেদনে বাদ পড়া শিক্ষার্থীর অভিভাবক রেফাত আরা বলেন, ' আমি না বুঝেই দিবা ও প্রভাতি শাখায় একবার করে দুইবার আবেদন করেছি। এজন্য আমার ছেলেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দিলে কেন তারা আবেদন একাধিকবার নিয়েছে।'
এ বিষয়ে বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মোস্তাফী বলেন, লটারিতে জালিয়াতি করায় মঙ্গলবার ৫৪ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত আরও ৩ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করেছি। মাউশির নির্দেশে আমরা এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। কিছু অভিভাবক এসে সকালে হট্টগোল শুরু করে। তাদের নিয়ন্ত্রণে এনে মাউশির কাছে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম বলেন , কিছু অভিভাবক হট্টগোল করেছিল। এরপর আমাদের সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এখন কোনও ঝামেলা নেই৷
উল্লেখ্য, চলতি বছর বগুড়া জেলা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে ১১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রভাতি ও দিবা শাখায় ২০৬ শিক্ষার্থী লটারিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। তবে আবেদন প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি ও ত্রুটি থাকা শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয় মাউশি। এজন্য প্রথম তালিকা থেকে সব আসন পূর্ণ হচ্ছে না। অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি করা হবে।
এসআইএইচ
