নৌকা প্রার্থীর কাজ না করায় মারধরের অভিযোগ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সিন্দুর্না ইউনিয়নের উপনির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় ভোটারদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নৌকা প্রার্থীর ভাই নুর মোহাম্মদ বাবলুকে প্রধান আসামি করে আরও ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকার অনুকুল চন্দ্র রায়, মহেশ চন্দ্র, মহেশ চন্দ্রের মা শ্রীমতি ফুলতি রানী ও বাবলু। আহতরা বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তারা সবাই আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলামের অনুসারী।
অভিযুক্তরা হলেন- নৌকা মার্কার প্রার্থী নূরল আমিনের ভাই নুর মোহাম্মদ বাবলু, ছেলে সিয়াম। এ ছাড়া নজরুল ইসলাম মোস্তফা, কেশরুজ্জামান বাবু, মহিদুল ইসলাম জুয়েল, মিন্টুসহ আরও অনেকে।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অনুকুল চন্দ্র জানান, আগামী ২৯ ডিসেম্বর সিন্দুর্না ইউনিয়নের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপনির্বাচনের নৌকা প্রার্থীর নূরল আমিনের ভাই নূর মোহাম্মদ বাবলু, ছেলে সিয়ামসহ অন্য অভিযুক্তরা শনিবার রাতে অনুকুল চন্দ্রের বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। এ সময় অনুকুল বাড়ির সামনে বের হলে নৌকা প্রার্থীর লোকজন তাকে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আরিফুল ইসলামের পক্ষে কাজ করতে নিষেধ করেন এবং নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে বলেন। এতে তিনি রাজি না হলে তার উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করেন। অনুকুলের চিৎকার শুনে মহেশ, শ্রীমতি ফুলতি রানী ও বাবুল তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে আহত করেন। পরে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ সময় মহেশ চন্দ্র বলেন, অনুকুলের চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে গেলে নৌকা প্রার্থীর লোকজন আমাদেরও মারধর শুরু করে। আমাদের কী অপরাধ? আমরা কাকে সমর্থন করব সেটা একান্ত নিজের ব্যাপার। কাউকে জোরজুলুম করে কিছু করা যায় না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে নৌকা প্রার্থী নূরল আমিনের ভাই নুর মোহাম্মদ বাবলু বলেন, আমি অনুকুলকে চিনি না। ওর সঙ্গে আমার কোনোদিন কথাই হয়নি। মারধর করতে যাব কেন? এটা মিথ্যা। তবে আমাদের লোক তাকে ডাকছিল। তার ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। তার যেটা ইচ্ছে সেটার পক্ষে কাজ করবে।
এ বিষয়ে সিন্দুর্না ইউনিয়নের উপনির্বাচনে আনারস প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থী নূরল আমিনের ভাই বাবলু ও সিয়ামসহ কয়েকজন আমার লোকজনকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে বলে। তারা রাজি না হওয়ায় তাদের বেধড়ক পেটানো হয়। তারা থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে নৌকা প্রার্থী নূরল আমিনের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি কলটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আকসা বলেন, আহত চারজনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, কেউ মারধরের শিকার হলে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন যদি নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে থাকে তাহলে তিনি যথাযত ব্যবস্থা নেবেন।
এসএন