এবার ফেসবুক জুড়ে ‘বয়কট সুরভী’
ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালে ফেরার পথে সুরভী-৯ লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বরিশাল নদী বন্দরে এসে অগ্নিকাণ্ডের ছবি তোলা যাত্রীদের ওপর লঞ্চ স্টাফদের হামলার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
‘বয়কট সুরভী’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। অগ্নিকাণ্ডের ছবি তোলা যাত্রীদের ওপর হামলার ছবি তুলছিলেন সাংবাদিকরা। তাদের উপর লঞ্চ স্টাফদের হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে তারা।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে প্রায় দেড় সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে বরিশালে আসছিল সুরভী-৯ লঞ্চটি। পথিমধ্যে ইঞ্জিনরুমে অগ্নিকাণ্ড দাবি করে কোনো এক যাত্রী ৯৯৯-এ কল করে। নৌ পুলিশ লঞ্চটি চাঁদপুরের মোহনপুরে ঘাটে ভেড়াতে বাধ্য করে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেওয়ার পরে লঞ্চটি ভোর রাতে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়। সে সময় যে সব যাত্রী ইঞ্জিনরুমের ছবি তুলেছে তাদের চিহ্নিত করে রাখে লঞ্চ স্টাফরা। লঞ্চটি কীর্তণখোলা নদীর চরকাউয়ার মোড়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সে সব যাত্রীদের কেবিনে গিয়ে মারধর শুরু করে তারা। বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জনকে।
অগ্নিকাণ্ডের ছবি ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দেখানোর কারণে লঞ্চের ম্যানেজার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে বিএম কলেজের ফিন্যান্স বিভাগের ছাত্র মারুফ হককে প্রথমে মারধর করা হয়। পরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের নেতা আবির কুন্ডু ও সুজয়সহ আরও বেশ কয়েকজনকে গণধোলাই দেয় লঞ্চ স্টাফরা। এই হামলার ছবি তুলতে গিয়ে হামলার শিকার হয় দুই সংবাদকর্মী রুহুল আমিন ও দেওয়ান মোহন। এই ঘটনায় লঞ্চটির যাত্রা বাতিল করা হয় এবং লঞ্চের ম্যানেজারসহ স্টাফদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় নদী বন্দর কর্মকর্তা ও দুই সংবাদকর্মীর মোট ৩টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
হামলার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সুরভী কোম্পানির লঞ্চের যাতায়াতের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মতামত জানিয়ে অনেকে নিজের টাইমলাইনে হ্যাশ-ট্যাগ ‘বয়কট সুরভী’ লিখে স্ট্যাটাস দেয়।
নিরব রায়হান নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘লঞ্চটি চাঁদপুরে ঘাট দেওয়া না হলে নদীর মাঝখানে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতো। আবারও পুড়ে ছাই হতো শত শত মানুষ। অস্তিত্ব মিলতো না কোনো কিছুর। তাই এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন লোকদের পরিচালিত লঞ্চে যাতায়াত মোটেই উচিত হবে না।’
আলামিন হোসেন সোহান লিখেছেন, ‘সুরভী লঞ্চের এ ঘটনাটি। যাত্রী দিয়ে যাদের পেটে ভাত যায় তারা যাত্রী হয়রানি করলে আল্লাহ সইবেন না। আল্লাহর বিচারের বাইরে কেউ না।’
শুধু নিজের টাইমলাইনেই নয়, অনেক মানুষ ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ‘বয়কট সুরভী’ লিখে পোস্ট করছেন।
এসএম/এসটি/এএন