সেন্টমার্টিনে প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী
ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকসামগ্রীর বিনিময়ে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সেন্টমার্টিন দ্বীপে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে উদ্বুদ্ধ করতে একটি বাজার স্থাপন করেছে সংস্থাটি। যেখানে টাকার পরিবর্তে প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য কিনতে পারছেন সবাই। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে পৃথক পোস্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এক পোস্টে সংস্থাটি জানায়, প্লাস্টিক উধাও হয়ে যাচ্ছে সেন্টমার্টিন থেকে। সুপারমার্কেটে চাল-ডাল কেনা যাচ্ছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে। তাই সবাই পাল্লা দিয়ে নামছে প্লাস্টিক সংগ্রহে। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া বোতল কিংবা চিপসের প্যাকেটে যে সৈকত দূষিত, সেটাই পরিষ্কার হয়ে আগের রূপ ধারণ করছে ধীরে ধীরে।
১০-২০ জন স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে বিশাল দ্বীপ পরিষ্কার অসম্ভব, তাই সবাইকে পরিষ্কারে উদ্বুদ্ধ করতে বিদ্যানন্দ একটা মার্কেট স্থাপন করে। যেখানে টাকার পরিবর্তে প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য কিনতে পারছেন সবাই। এই উদ্যোগে পাশে থাকার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সংস্থাটি।
আরেকটি পোস্টে বিদ্যানন্দ জানায়, সেন্টমার্টিন প্লাস্টিক ময়লায় ডুবে যাচ্ছে দিন দিন। কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে পুরো দ্বীপ তো পরিষ্কার করতে পারব না, তাই সবাইকে সংযুক্ত করতে চাচ্ছি এই কার্যক্রমে। পুরো সেন্টমার্টিনের প্লাস্টিক বর্জ্য রাতারাতি জড়ো করে রিসাইকেলের উদ্যোগের স্বপ্ন আমাদের।
বিদ্যানন্দ একটা সুপারমার্কেট স্থাপন করছে এখানে। যেখানে প্লাস্টিকের বিনিময়ে পণ্য পাওয়া যায়। যেমন এক কেজি প্লাস্টিকে এক কেজি চাল। ডাল নিতে তিন কেজি প্লাস্টিক। একদিকে হবে পরিষ্কার, অন্যদিকে ঘরে আসবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।
অপর একটি ফেসবুক পোস্টে সংস্থাটি জানায়, সেন্টমার্টিনে প্লাস্টিক এখন ফেলনা নয়, বরং টাকার মতো মূল্যবান। গল্প নয়, সত্যিই তাই। বিদ্যানন্দের এক্সচেঞ্জ স্টোর এবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল-ডালসহ খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে। তাই সবাই পাল্লা দিয়ে নেমেছে প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট আর পলিথিন সংগ্রহে।
ফেসবুক পোস্টে সংস্থাটি আরও জানায়, প্লাস্টিক বিক্রির হাট বসেছে সেন্টমার্টিনের বুকে। আশপাশের পতিত জায়গা থেকে শুরু করে ঘরের কোনায় কিংবা খাটের নিচে, এক ইঞ্চি জায়গাও বাদ নেই পুরো এলাকায়। সবাই যেন মিছিল নিয়ে ছুটছে বিদ্যানন্দের এক্সচেঞ্জ সেন্টারের দিকে। এক পাল্লায় প্লাস্টিক, অন্য পাল্লায় বিনিময়ে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, বর্জ্যকে মহামূল্যবান সম্পদে রূপান্তরকরণে এর চেয়ে সুন্দর উদাহরণ আর কী হতে পারে। আমাদের পর্যটন কেন্দ্রগুলো হোক প্লাস্টিক দূষণমুক্ত। আবারও ফিরে আসুক হারিয়ে যাওয়া সেই সৌন্দর্য। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই মহৎ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
এএজেড