সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লার গোমতীর চরের মাটি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গোমতীর দুই পাড়ে মাটি কাটার ঘাট নিয়ন্ত্রণ করছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে শতাধিক ঘাট থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে ওই চক্র। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়েও তাদেরকে ধরা যাচ্ছে না। গোমতীর চরে রাতদিন চলে এমন তাণ্ডব। তাদের কবলে পড়ে খর স্রোতা গোমতী নদী ধ্বংস হচ্ছে।
গত কয়েকদিন গোমতীর দুই পাড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে প্রায় দুই শতাধিক মাটি বোঝাই ট্রাক্টর বিভিন্ন ইটভাটায় যাওয়া-আসা করছে। এসব ট্রাক্টর নদীর উপরে নিচে ওঠানামা করায় হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ ও গোমতীর সেতু। ধুলায় বিপন্ন হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। খলিলপুর, চরবাকর, লক্ষীপুর, কালিকাপুর শিবনগরসহ প্রায় অর্ধশত ঘাট থেকে প্রায় ৩ শতাধিক ট্রাক্টর মাটি কেটে নিচ্ছে। সড়ক কেটে গোমতী নদীর বাঁধের ভেতর দিয়ে এসব ট্রাক্টর ওঠানামা করায় এবং এই নদী থেকে মাটি কেটে ব্রিজের উপর দিয়ে নেওয়ায় কালিকাপুর, লক্ষীপুর, খলিলপুর ও দেবিদ্বারের তিনটি সেতুই হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ব্রিজের উপরে চলাচল করলে পুরো ব্রিজ প্রচণ্ড কেপে ওঠে। এতে ধীরে ধীরে সেতুর পিলার থেকে মাটি সরে গিয়ে যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে বড় কোনও দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী, শাহ আলম ও সেতারা বেগম বলেন, উপর মহলের সব কিছু ম্যানেজ করেই এসব করছে। শক্তিশালী চক্রটি রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দিনের পর দিন এভাবেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গোমতী চরের ফসলি জমি নষ্ট করছে। আমরা কিছু বললে আমাদের ভয়-ভীতি দেখায়। প্রশাসন অভিযান চালালে একদিন বন্ধ থাকে। তবে পরদিনই আবার মাটি কাটা শুরু হয়। এর কারণে এক সময়কার খর স্রোতা গোমতী নদী দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো.কামাল উদ্দিন জানান, দেবিদ্বার উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় থেকে যারা অবৈধ ভাবে গোমতী নদী থেকে মাটি কাটছে একাধিক বার অভিযান চালিয়ে ট্রাক্টর আটক ও জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজই আসছে না।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, গোমতী নদীতে মাটি কাটার দায়ে ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে দুটি ট্রাক্টর জব্দ করা হয়েছে। আরও অভিযান চালানো হবে।
এসআইএইচ