'জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হবে'
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন- বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, সেনা ও বিমানবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের হত্যার দায়ে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা হবে। এই খুনি জিয়াউর রহমানের কবর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে থাকতে পারে না। বাংলার মানুষ সেখানে সেই তথাকথিত কবর মানে না। সেখানে কিন্তু জিয়াউর রহমানের লাশ নাই, চ্যালেঞ্জ করি। আমি জাতীয় সংসদে বলেছি কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে- তাহলে আমরা কোন কথাই বলবো না।
মন্ত্রী শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে 'মায়ের কান্না' নামক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কলংকজনক ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলো, তারই পুণরাবৃত্তি করার জন্য তারা এই ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছিলো। ওই খুনিরা পারে নাই, পারবে না। তারা হুঙ্কার দিয়েছে- তারা নাকি সরকার পতন ঘটাবে। ভুলে যান এসব, এটা ৭৫ সাল নয়। এটা ২০২২ সাল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা ক্ষমতায় এসেছে। তাই আবারও এভাবে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। কোন লোভে তারা তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চাচ্ছে - তা আমরা বুঝি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষের কোন শক্তিকে বাঙালি আর ক্ষমতায় আনবে না। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ১৯৭৭ সালে ষড়যন্ত্রমূলক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা তাদের হারানো স্বজনের স্মৃতিচারণ করে ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৭৭ সালে অন্যায়বাবে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট আ ক ম মাইনুদ্দিন এর ভাই আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। মায়ের কান্না অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ও মায়ের কান্না সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন ১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ এজাহার খান এমপি, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মোর্শেদ বীর বিক্রম, দিপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, কর্পোরাল লরেন্স ডি রোজারি।
বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ১০০ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কান্না জড়িত কন্ঠে বক্তব্য রাখেন কর্পোরাল মোবারক আলীর মেয়ে মমতাজ বেগম, সার্জেন্ট সাইদুর রহমান মিয়ার ছেলে কামরুজ্জামান মিয়া লেলিন, সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নূরে আলম, সার্জেন্ট আফাজউদ্দিন ভূইয়ার ছেলে মাসুদুল আলম, সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম, সার্জেন্ট মোফরাকুল আলমের মেয়ে রিমনা বেগম।
এএজেড