সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১১ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

কাগজ সংকট, হুমকির মুখে রাজশাহীর প্রকাশনা শিল্প

আগে থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজশাহীর প্রকাশনা শিল্প। এর মধ্যে ‘মরার উপর খরার ঘা’ এর মতোই লাগামহীনভাবে বাড়ছে এই শিল্পের কাঁচামালের দাম। শুধুমাত্র মূল্যবৃদ্ধিই নয়, টাকার বিনিময়েও প্রয়োজনীয় কাগজ পাচ্ছেন না তারা। এতে হুমকির মুখে পড়েছ এই অঞ্চলের প্রকাশনা শিল্প।

প্রকাশক ও মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে প্রকাশনা শিল্পের অন্যতম প্রধান উপকরণ কাগজ ও কালির দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বাড়তি দামেও প্রতিদিনের চাহিদা মাফিক কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি কাগজ মিলগুলো এখন বন্ধ। বসুন্ধরা গ্রুপের কাগজই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এ ছাড়াও ফ্রেশ কোম্পানিসহ দুটি কাগজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তেমন একটা কাগজ দিতে পারছে না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, জাতীয় বই মেলার পূর্বে ও বছরের শেষের এই সময়টা প্রকাশনা শিল্পের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। ভরা মৌসুমও বলা চলে। কিন্তু এই সময়ে কাগজের জন্য তারা কাজ করতে পারছেন না। অনেক প্রকাশক কাগজের বাড়তি দামের কারণে এখন বই প্রকাশ করা থেকেও বিরত থাকছেন। এছাড়া আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকাগুলোও অনেকে সার্কুলেশন কমিয়ে দিয়েছে। পত্রিকাগুলোও সংকটে ধুকছে। কেউ কেউ পত্রিকা ছাপা বন্ধও করে দিয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন। অলস সময় পার করছে শ্রমিকরাও।

নগরীর প্রিন্টিং প্রেস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত তিন-চার মাসের ব্যবধানে রাজশাহীর বাজারে কাগজের দাম কোনও কোনও ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ৫৫ গ্রাম কাগজ আগে ১ হাজার ২৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও সেই কাগজ এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। ৮০ গ্রাম কাগজের দাম ১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা। গ্লোসারি ১০০ গ্রাম কাগজ আগে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। আগে সুইটিজ বোর্ড ২০ থেকে ২১ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৩ টাকায়। এ ছাড়াও ডিলার পর্যায়ে প্রত্যেক টন কাগজে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বাড়তি। শুধু কাগজই নয়, এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকল উপকরণের দামই বাড়তি। আগে ২ পাউন্ড কালি ৩৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৬০ টাকা। আগে ৫ লিটার কেরোসিনের দাম ৩২৯ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। জেট অ্যামোইল আগে ৮৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। এ ছাড়াও এখন বইয়ের বাইন্ডিং খরচ আগে জ্যাকেট বাধাইয়ে ১৯ থেকে ২০ টাকা হলেও এখন তা নেওয়া হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা।

নগরীর নিউমার্কেট, ষষ্ঠিতলা, গোরহাঙ্গা ও আশেপাশের এলাকার প্রিন্টিং প্রেস কারখানাগুলো ঘুরে দেখা যায়, দিনের অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখছেন কারখানা। যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রয়েছে সেখানেও শ্রমিকদের অলস সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে।

নগরীর নিউ মার্কেট সুলতানাবাদ এলাকায় অবস্থিত রংধনু অফসেট প্রিন্টিং প্রেসের প্রোপ্রাইটর মো. তাজউল ইসলাম জানান, করোনাকালীন তিনি সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছেন। করোনার ক্ষত পুনর্গঠনের আগেই নতুন সংকটের মুখে পড়েছেন। এই শিল্পের উপকরণ একটি ব্লেড থেকে শুরু করে সকল কিছুর দাম বেড়েছে। এ কারণে নিয়মিত গ্রাহকরাও একান্ত জরুরি ছাড়া আসছেন না। আবার চাহিদা অনুযায়ী কাগজও পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অধিকাংশ সময়ই কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

রাজশাহীর পত্রিকাগুলোর দুরাবস্থার চিত্র তুলে ধরে দৈনিক সোনালি সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী জানান, পত্রিকা সাধারণত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিজ্ঞাপন পত্রিকার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু করোনার মধ্যে বিজ্ঞাপন ছিল না বললেই চলে। কোনো মতে তারা প্রতিষ্ঠানকে চালিয়ে যাচ্ছেন। রঙিন থেকে সাদাকালো করে পত্রিকা ছাপাতে হয়েছে। করোনা পরবর্তীতে যখন তারা কিছুটা এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন এর মধ্যে কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির নতুন সংকট এসে পড়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে রাজশাহীর আঞ্চলিক প্রিন্ট পত্রিকাগুলো আর কতদিন টিকে থাকতে পারবে এটাই বড় প্রশ্ন তার কাছে।

এদিকে রাজশাহীতে এখনও প্রকাশনা ব্যবসা তেমন জমে উঠেনি। এখানে লেখকরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই বেশি বই ছাপান। এমন পরিস্থিতিতে তারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আবার মফস্বল এলাকায় থেকে যারা রাজধানীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাচ্ছেন এমন উদীয়মান প্রতিষ্ঠানও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

নগরীর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় অবস্থিত স্ব-চিত্র প্রকাশনীর কর্ণধার ফাহমিদুর রহমান জানান, মফস্বল এলাকায় অবস্থান করে সৃজনশীল প্রকাশনী নিয়ে কাজ করা দুরুহ বিষয়। তবে তিনি রাজশাহী থেকে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃজনশীল প্রকাশনী নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু করোনার পর আবারও নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। আসন্ন জাতীয় বই মেলাকে সামনে রেখে মোট ২৭টি বই প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতির শিকার হয়ে ৮টির বেশি পারছেন না। এতে তিনি আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি লেখকদের আগ্রহ কমছে। বইয়ের বিক্রিও কমেছে। সৃজনশীল বিকাশের পথও রুদ্ধ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বাগতম নস্কার জানান, মুদ্রণ শিল্প করোনার মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্যে পড়েছিল। অনেকে এই সময় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। আর রাজশাহীর মতো জায়গায় ক্ষতির মুখেও তারা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনও রকমে টিকে আছেন। কিন্তু করোনা পরবর্তী বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও নতুন সংকটের মুখে পড়েছেন। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা উর্ধ্বমুখি। আবার চাহিদা অনুযায়ী কাগজও পাওয়া যাচ্ছে না। কারখানাও অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে দুরাবস্থার মধ্যে রয়েছেন তারা।

তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে আগে মাসে ১৩-১৪টি ট্রাকে করে বসুন্ধরার কাগজ আসত সেখানে এখন আসে ৩-৪ ট্রাক। অন্য কোম্পানিগুলোর কাগজ সরবরাহ নেই বললেই চলে। এখন বসুন্ধরাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের কাগজ বিক্রির জন্য রাজশাহীতে চারজন ডিলার রয়েছেন। এরমধ্যে একজন কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতি মাসেই কাগজের দাম কিছু না কিছু বেড়েছে এটা সত্য। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এমনটা হয়েছে। আর দাম বৃদ্ধির কারণে রাজশাহীতে চাহিদা কমেছে। তার নিজেরই একটা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আছে। আগে তার প্রতিষ্ঠানের জন্য যেখানে ১০ টন কাগজ লাগত। সেখানে তিনি ২ টনের কাজ করতে পারছেন।

Header Ad
Header Ad

জেল থেকে পালালেন আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, ফাইয়াজের দাবি

ছবি: সংগৃহীত

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি কারাগার থেকে পালিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আবরারের ছোট ভাই ও বুয়েট ছাত্র আবরার ফাইয়াজ।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন। ফাইয়াজের দাবি, আসামি জেমি গত ৫ আগস্টের পর জেল থেকে পালিয়েছেন, তবে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়েছে ছয় মাস পর।

ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাইয়াজ লেখেন, “আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে গেছে ৫ আগস্টের পরে। অথচ আমাদের জানানো হচ্ছে আজকে, যখন ওর আইনজীবী কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আসেনি তখন।”

তিনি আরও লিখেছেন, “ফাঁসির আসামির তো কনডেম সেলে থাকার কথা ছিল, সে পালাল কিভাবে! পালানোর পরেও এতদিন এ তথ্য গোপন রাখা হয়েছে, যা স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে তাকে ধরার জন্য কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর আগে থেকেই আরও তিনজন আসামি পলাতক রয়েছে।”

ফাইয়াজ তার পোস্টে মুনতাসির আল জেমির নাম ও ঠিকানাও উল্লেখ করেন।

নাম: মুনতাসির আল জেমি
পিতা: আব্দুল মজিদ
মাতা: জোসনা বেগম
ঠিকানা: ৫/১ বাউন্ডারি রোড, নতুন বাজার, কোতোয়ালি, ময়মনসিংহ।

এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

Header Ad
Header Ad

তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাজধানীতে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। ওইদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের ঘোষণা দেওয়া হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচির আওতায় অনলাইন ও সরাসরি মাঠপর্যায়ে জনমত জরিপ চালানো হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, রোববার বিকেল পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি মানুষ এই জরিপে অংশ নিয়েছেন এবং তাদের মতামত প্রদান করেছেন। এই মতামতের ভিত্তিতেই নতুন রাজনৈতিক দলের কাঠামো ও আদর্শ নির্ধারণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটির নীতিনির্ধারকদের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন নাহিদ ইসলাম। এছাড়া দলের সদস্যসচিব হিসেবে বর্তমান জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে।

নতুন এই রাজনৈতিক দল তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত হতে যাচ্ছে এবং এটি দেশের বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে কাজ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। দলের মূলনীতি, লক্ষ্য ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হবে।

Header Ad
Header Ad

বিভেদের সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজনৈতিক দল, নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন পারস্পরিক বিভেদ সৃষ্টি করে স্বৈরাচারকে ফিরে আসার সুযোগ না দেওয়া হয়। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, তর্ক-বিতর্কের সময় এমন কিছু যেন না ঘটে, যাতে স্বৈরাচার কিংবা দেশের স্বার্থবিরোধী শক্তি সুযোগ পেয়ে যায়। সংস্কার নিয়ে অযাচিত আলোচনা করলে রাষ্ট্রের মূল সমস্যা আড়াল হয়ে যেতে পারে, তাই এর পরিবর্তে দ্রুত নির্বাচন নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সোমবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে খুলনা মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একটি রাজনৈতিক দল। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যাতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারলে দেশকে বর্তমান সংকট থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রয়েছে এবং দলকে আরও গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বহু নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন, গুম হয়েছেন এবং নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এখনো প্রতিনিয়ত নেতাকর্মীরা গায়েবি ও মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন। এসব কেবল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

তিনি বলেন, দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চা শক্তিশালী হলে, নেতৃত্ব সঠিক ব্যক্তিদের হাতে গেলে দল সুসংগঠিতভাবে এগিয়ে যাবে। একইভাবে দেশের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়লে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে দেশের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে কাজ করতে পারবেন। অতীতে কীভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে এবং নিরীহ মানুষ নির্যাতিত হয়েছে, তা আমরা দেখেছি। বিশেষ করে গত জুলাই-আগস্ট মাসে ১৪০০ নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হলে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, কৃষি খাত ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দিকে নজর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, যদি আমরা এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নিই, তাহলে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

তারেক রহমান আরও বলেন, স্বৈরাচার সবকিছু ধ্বংস করে দেশ থেকে পালিয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বহু বছর আগে বলেছিলেন, এই স্বৈরাচার একদিন লুটপাট করে দেশ ছেড়ে পালাবে—আজ সেটাই সত্য হয়েছে। আমরা এখন সংস্কারের কথা বলছি, কিন্তু যদি শুধু এই বিষয়ে অযাচিত আলোচনা চালিয়ে যাই, তাহলে জনগণের প্রকৃত সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নারী উন্নয়ন, শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা তুলে ধরেন তারেক রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। গণতন্ত্রের চর্চা যত বেশি হবে, ততই রাজনৈতিক প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ কারণেই বিএনপি দলের মধ্যে গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন করছে।

সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তার বক্তব্যের সময় নেতাকর্মীরা হাত তুলে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

সকালে সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হয়। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রঙের ক্যাপ-টি শার্ট পরে ও প্ল্যাকার্ড হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আয়োজিত এই সম্মেলনে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনিন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, শামীমুল ইসলাম শামীম, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি নেতা সৈয়দা নার্গিস আলী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, কাজী মিজানুর রহমান, কে এম হুমায়ুন কবীর, হাফিজুর রহমান মনি, শেখ মোহাম্মদ আলী বাবু ও মুর্শিদ কামাল।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা। সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন এবং শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সৈয়দা রেহানা ঈসা।

নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য যা ইচ্ছা তাই করেছেন। কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন। সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটার সংখ্যা ছিল ৫০৫। উল্লেখ্য, খুলনা মহানগর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৩ নভেম্বর। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর গঠিত হয়েছিল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জেল থেকে পালালেন আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, ফাইয়াজের দাবি
তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে শুক্রবার
বিভেদের সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান
সাজেক ইকো ভ্যালিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পর্যটন নিষেধাজ্ঞা
রোজা সামনে রেখে খেজুরের দাম কমেছে ৪০ শতাংশ!
সন্ধ্যার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা টের পাবেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিমান ঘাঁটিতে হামলা ও যুবক নিহতের ঘটনার ব্যাখ্যা দিল আইএসপিআর
পদত্যাগ করতে রাজি জেলেনস্কি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গায়েবানা জানাজা
জেনে নিন খেজুরের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
মিঠাপুকুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা
সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সাজেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে
মুসলিম গণহত্যা: ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী
কক্সবাজার বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা, নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছে
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পানিতে পড়ে প্রাণ গেল শিশুর
ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক রেষারেষি নিয়ে যা বললেন রিজভী
রমজানে সরকারি অফিস চলবে ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা
দেশের স্বার্থে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত না করার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
সাভারে কাপড়ের কারখানায় আগুন, পুড়ে ছাই কাপড় ও কার্টন
বিয়ের ছবি প্রকাশ করলেন মেহজাবীন চৌধুরী