কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ৪ লাখ জমায়েতের প্রস্তুতি
কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সমৃদ্ধ করতে নানা ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর কক্সবাজার সফর করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ জন্য বিশাল জনসভা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যেখানে সাড়ে চার লাখ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ২০১৭ সালের ৬মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ কক্সবাজার সফর করেন। সাড়ে পাঁচ বছর পর আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার সফর করবেন তিনি। আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ায় অংশ নিতে তার এই সফর। ওই দিন উখিয়ার ইনানীতে বঙ্গোপসাগরের পাড়ে আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ায় অংশ নেবেন তিনি। তারপর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, দেশের অন্য এলাকার চেয়ে কক্সবাজারে বেশি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এখানে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেরিনড্রাইভ প্রসস্থকরণ, সাব মেরিনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এল.এম.জি টার্মিনালসহ অসংখ্য মেগা প্রকল্প। এসব প্রকল্পের দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর এবারের জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেবল সভাস্থল শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয় পুরো কক্সবাজার শহর হবে জনারণ্য। জনসভায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের ভেতরে আড়াই লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত হওয়ার যোগ্য। তা ছাড়াও সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, বাহারছড়ার মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হলিডের মোড়, শহীদ সরণী এলাকা, কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোন হয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড় পর্যন্ত মানুষের জমায়েত হবে। এ জন্য পুরো এলাকাজুড়ে দুই শতাধিক মাইক ব্যবহার করা হবে।
ইতিমধ্যে রাত-দিন মিলে সভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘সভাস্থলে প্রধানমন্ত্রীর মূল মঞ্চটি হবে নৌকা আকৃতির। এর সঙ্গে থাকবে ৪টি উপমঞ্চ। যেখানে কেন্দ্রীয় নেতারাসহ জেলা নেতারা অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে সভা উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য থাকবে আলাদা মঞ্চ।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল আলম চৌধুরী জানান, শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে মানুষ সমাগম শুরু হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানান, দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পৌর এলাকাজুড়ে সাজসাজ রব পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনসভায় কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লাখের অধিক মানুষ উপস্থিত হবে। একই সঙ্গে রামু, ঈদগাঁও থেকে যোগ দিবে আরও দেড় লাখ মানুষ। এর বাইরে উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে জনসমুদ্রে ভরে উঠবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রস্তুতিমূলক সভা হচ্ছে প্রতিদিন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ