প্রতিহিংসাবসত ছাগল হত্যা, পলাতক অভিযুক্ত
লক্ষ্মীপুরে প্রতিহিংসাবশত প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি পাঠা ছাগলকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে মুসলিম নামে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন মুসলিম। এদিকে ছাগলটির মৃত্যুতে মালিক দুলাল হোসেনের স্ত্রী নুরজাহান বেগম ও ছোট্ট শিশু কন্যা ঝুমার কান্না কিছুইতে থামছে না।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১০টার দিকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সদর থানা পুলিশ। দুলাল একই গ্রামের মতিন মেম্বারের বাড়ির বাসিন্দা।
দুলালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ির অদূরে রাস্তার পাশেই একটি মাচা তৈরি করে দুটি ছাগল টমি ও লালাকে রাখতেন। এই ছাগলগুলোকে প্রজননের কাজে ব্যবহার করে আসছেন তিনি। দূর-দূরান্তের লোকজন ছাগল প্রজননের জন্য তার কাছে আসে। দুলালের মতো প্রতিবেশী অটোরিকশাচালক মুসলিম আহমেদেরও দুটি পাঠা ছাগল রয়েছে। কিন্তু লোকজন মুসলিমের কাছে আসে না। এতে গত কয়েকদিন ধরে মুসলিম তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মুসলিম হুমকিও দেয় তাকে। তুই দুলাল কিভাবে এখানে ছাগল রাখবি, আমি একবার দেখে নিব। প্রতি রাতেই দুলাল ছাগলগুলোর সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর দুলাল স্থানীয় পিয়ারাপুর বাজারে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন টমি মাচাতে নেই। লালা আছে। পরে দেখতে পান টমির মৃতদেহ মাচার নিচে পড়ে আছে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চান দুলাল। এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এদিকে খবর পেয়ে টমিকে এক নজর দেখতে জড়ো হয় শত শত মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, বছরখানেক আগে মুসলিম বোম্বে মরিচ খাইয়ে দুলালের ৩টি ছাগল মেরে ফেলেছিল। এখন আবারও তার একটি ছাগকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মুসলিমকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।
দুলাল হোসেন বলেন, প্রায় ৩ বছর আগে তিনি ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে টমিকে কমলনগর উপজেলার তুলা তলি এলাকা থেকে কিনেছেন। এখন টমির বাজার মূল্য প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ছিল। টমি ও লালাকে দিয়ে আয় করা টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে। কিন্তু হিংসাত্মক মনোভাব থেকে আমার টমিকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই অটোরিকশাচালক মুসলিম আত্মগোপনে রয়েছেন। এতে চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার স্ত্রী ফরিদা বেগমের দাবি, ‘আমার স্বামী হত্যা করছে? না কে হত্যা করছে? এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।’
মুসলিম কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মুসলিম কি আমায় বলে গেছে? ঘটনার পর থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত মুসলিম বাড়িতে আসেনি।’
সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মকবুল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল গিয়ে ভূক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। ধারণা করা হচ্ছে মুখের ভেতর পলিথিন ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে ছাগলটিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জানান, ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ