দুই দিন আগেই সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা
এক দিন পরেই কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। আর এ সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুনে বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। শেষ মুহূর্তে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। এদিকে সমাবেশের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর থেকেই সমাবেশ স্থলে এসে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতা-কর্মীরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।
রাতে সমাবেশ স্থল ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই পাটি-পলিথিন বিছিয়ে সেখানে বসে পড়েছেন রাত কাটানোর জন্য। অন্যান্য নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি মহিলা দলের নেত্রীরাও টাউন হল মাঠে অবস্থান নিচ্ছেন। তারা বলছেন, কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরির আগেই সমাবেশ স্থলে চলে এসেছেন। গণসমাবেশ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা কুমিল্লাতেই অবস্থান নেবেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বলেন, কুমিল্লায় একটি বৃহৎ গণসমাবেশের লক্ষ্যে আমাদের সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশের টিম লিডার বরকত উল্লা বুলু নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন। আমরা দুই দিন আগেই কুমিল্লায় অবস্থান নিয়েছি। সমাবেশ সফল করে, সরকার পতনের ডাক দিয়েই আমরা এখান থেকে ফিরব। মানুষের স্রোত কুমিল্লামুখী আসতে শুরু করেছে। ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় জনসমুদ্র হবে।
এ সময় কথা হয় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সাবেরা আলাউদ্দিন হেনার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ বিভিন্ন দাবিতে আমাদের এই গণসমাবেশ। ইতিমধ্যে আমাদের নেত্রীবৃন্দ কুমিল্লায় আসতে শুরু করেছেন। যারাই কুমিল্লায় আসছেন আমরা তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে থাকা ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা করছি।
এদিকে কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার থেকেই কুমিল্লায় অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলুসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় করে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন তারা।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ৫টি ইউনিট নিয়ে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কুমিল্লার পাশাপাশি চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নেতৃবৃন্দরা আগে থেকেই তাদের ‘প্লেস’ নির্ধারণ করে রেখেছেন। সুতরাং কেউ আগে চলে আসলেও তাদের থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকেও ১০/২০ হাজার মানুষের খাওয়া ও নাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের উচ্ছাস-আগ্রহ দেখে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, কুমিল্লার গণসমাবেশ সফল ও সার্থক হবে। আমাদের সকল প্রস্তুত সম্পন্ন আছে।
জানা গেছে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লার টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির গণসমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইতিমধ্যে ১০টি শর্তে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে এ সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। যদিও দলের নেতারা বলছেন, শর্তের বিষয়টি মাথায় নিচ্ছি না, অনুমোদন পেয়েছি-এটাই বড় কথা। শর্তের বেড়াজালে জনতার জোয়ার আটকে রাখা যাবে না।
এদিকে বিএনপির গণসমাবেশকে ঘিরে এবার কুমিল্লায় থাকছে না কোনও পরিবহন ধর্মঘট। দলটির অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে বিভিন্ন দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হলেও কুমিল্লায় কোনও ধর্মঘট ডাকা হবে না বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ।
বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ কবির আহমেদ বলেন, পরিবহন মালিক বা শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে কিংবা ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনও সম্পর্ক নেই। সংগঠনের কেন্দ্র থেকে এখন পর্যন্ত কোথাও ধর্মঘটের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পরিবহন মালিক সমিতি একটি স্বাধীন সংগঠন। আমাদের দাবি-দাওয়া আছে এটা ঠিক, তবে আমরা এখন এগুলো সামনে আনতে চাই না।
এসআইএইচ