ব্যবহারিক নম্বর না পাঠানোয় অকৃতকার্য ৪২ শিক্ষার্থী

ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর না পাঠানোয় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ৪২ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। উপজেলার আলাউদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার শিকার হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিকার চাইতে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এলে তাদের সঙ্গে শিক্ষকরা অসদাচরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিভাবকরা জানান, আলাউদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার বিল্ডিং মেইনটেনেন্স ট্রেড থেকে তাদের সন্তানরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। গত ১ ডিসেম্বর এসএসসির ফল প্রকাশের পর তারা ট্রেডের মোট ৪২ জন শিক্ষার্থীর সকলের অকৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। প্রথমে তারা বিষয়টি বুঝে উঠতে না পারলেও পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার অন্য দুটি ট্রেডের রেজাল্ট ভালো, শুধু একটি ট্রেডের সব শিক্ষার্থী অকৃতকার্য।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনেকে কান্নাকাটি করতে থাকেন এবং কেন এমন হয়েছে জানতে চাইলে বিল্ডিং ট্রেডের শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ও রুমানা পারভীন তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।
আজিমুল বাকী নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষিকা রুমানা পারভীনের কাছে শিক্ষার্থী উর্মিলা খাতুন ও হিরা খাতুন কান্নাকাটি করতে থাকলে তিনি কটাক্ষ করে তাদের বলেন, তাহলে তোরা কি এখন আত্মহত্যা করবি?’
শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক তাদের রুঢ়ভাবে বলেন, রেজাল্ট কেন আসেনি বিষয়টি জানাতে তিনি বাধ্য নন।
অভিভাবকরা দাবি করেন, শিক্ষকরা তাদের সন্তানদের প্র্যাকটিক্যাল (ব্যবহারিক) খাতা কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে না পাঠানোর কারণে তাদের সন্তানরা অকৃতকার্য হয়েছে।
তারা জানান, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের কাছ থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত রেজাল্ট ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ঠিক না হলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তারা মামলা করবেন।
এ বিষয়ে আলাউদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদ উদ্দিন জানান, তারা প্র্যাকটিক্যাল নম্বর মেইল করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু যে কোনো জটিলতায় হয়তো তাদের কাছে সেটি পৌঁছায়নি। তারা প্র্যাকটিক্যালের হার্ড কপিও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কী কারণে এমন হয়েছে সেটা বুঝতে পারছেন না।
ইতোমধ্যে তিনি ভোকেশনালের শিক্ষক হারুন অর রশিদকে বোর্ডে পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে জানানো হয়েছে আগামী রবিবার মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্য দুটি ট্রেডের রেজাল্ট নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। শুধু একটিতে কেন এমন হয়েছে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরিচালক (পরীক্ষা) খাইরুল বাশার মোবাইল ফোনে প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। রবিবার বিষয়টি নিয়ে মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
/এএন
