ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: মেরিন ড্রাইভের দুই অংশে ভাঙন
কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে গেছে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও সমুদ্র সৈকতের পাড়। সৈকতের বালিয়াড়ির পাশাপাশি টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের দুই পাশের অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
ঝড় কেটে গেলেও মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সাগর উত্তাল দেখা গেছে। উত্তাল ঢেউ আঘাত হানে বালিয়াড়ি ও জিও ব্যাগে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী সৈকত দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। কিন্ত সাগর শান্ত না হওয়ায় এখনো সমুদ্রে নামায় রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, প্রশাসনের তৎপরতার কারণে জেলায় প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিনে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। তারপর দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কাজ শুরু করা হবে। কক্সবাজারের ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন তারা।
সৈকতের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে সৈকতে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট, তলিয়ে গেছে জিও ব্যাগ। সৈকতের শৈবাল থেকে কলাতলী পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙন হয়েছে বালিয়াড়ির। একই সঙ্গে ময়লায় সয়লাব সাগরপাড়।
মহিউদ্দিন আহমেদ নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ৮ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়ে আঘাত করেছে সৈকত এলাকায়। সৈকতের দরিয়ানগর এলাকায় বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ভেসে গেছে ঘরের আসবাবপত্র।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী সৈকত দেখে হতাশ পর্যটকরা। বালিয়াড়ি ও জিও ব্যাগে দাঁড়িয়ে উত্তাল সাগর দেখছেন তারা। অনেকে ছবি তুলে ক্যামেরায় বন্দী করছেন। তবে ভয়ে কেউ নামছেন না সমুদ্রস্নানে।
হামিদা বেগম নামের এক পর্যটক বলেন, সাগর উত্তাল। এ কারণে সাগরে নামতে ভয় লাগছে। তাই দূর থেকে দেখে ছবি তুলেছি।
শফিউল আলম নামে আরেক পর্যটক বলেন, রাতে জোয়ারের পানির ভয়ে সাগর না দেখে হোটেলের রুম চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে সৈকতপাড়ে এসে দেখি সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। সৈকতের পুরো সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। সৈকতের বালিয়াড়ি ময়লা আবর্জনায় সয়লাব।
এদিকে সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিচ্ছেন লাইফগার্ড কর্মীরা। ‘সি সেইফ’ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মোহাম্মদ সিরু আলম বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় এখনো পর্যটকদের নামার অনুমতি নেই। মাইকিং করে পর্যটকদের অনুরোধ করা হচ্ছে নির্দেশনা মেনে চলতে।
এদিকে টেকনাফের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরফান হক চৌধুরী বলেন, সিত্রাংয়ের সময় সমুদ্রের জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আঘাতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়ার শ্মশান এলাকায় মেরিন ড্রাইভের দুটি অংশে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে সড়কের ৬-৭ হাত করে অংশ ভেঙে গেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সিত্রাংয়ে কোনো হতাহত না থাকলেও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের জন্য কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
এসজি