‘আমরা আগেঅউ ভালা আছলাম’
তেমুখী পয়েন্টের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। এক বছর আগে তিনি ছিলেন সিলেট সদর উপজেলার বাসিন্দা। তেমুখী সিলেট সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এখন তিনি সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। তবে সিসিকের বাসিন্দা হলেও ক্ষোভের অন্ত নেই সাইফুল ইসলামের। খেদোক্তি প্রকাশ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আগেঅউ আমরা ভালা আছলাম।’
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নগরের অধিবাসী বলতে পারা ছাড়া গেল এক বছরে আর কোনো সুযোগ পাওয়া যায়নি। বরং আগে স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা পরিষদ পাশে থাকলেও এখন আর সে রাস্তাও খোলা নেই। ফলে সমস্যা একাধিক থাকলেও তাতে নজর নেই সিলেট সিটি করপোরেশনের।
এই অবস্থা শুধু সিসিকের বর্ধিত এরিয়ার তেমুখীতেই নয়, নতুন যুক্ত হওয়া ১২টি ওয়ার্ডেই এমন ক্ষোভ স্থানীয়দের। ন্যূনতম নাগরিক সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন না ওইসব এলাকার মানুষ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, সিসিকে অন্তর্ভুক্তি শুরু হওয়ার পর থেকে উন্নয়নবঞ্চিত এই এলাকাগুলো। সিসিকের বর্ধিত ওইসব এলাকায় আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে সিসিকের। কিন্তু গেল এক বছরেও ওই কার্যালয়গুলোর কার্যক্রম নেই। এর ফলে সমস্যা যেভাবে বাড়ছে, একইসঙ্গে বাড়ছে ভোগান্তিও।
নগরীর টুকেরবাজার ও তেমুখী পরিদর্শন শেষে স্থানীয়রা জানান, সিসিকের ৩৮ ও ৩৮ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। সারা বছরই লেগে থাকে জলাবদ্ধতা। যত্রতত্র পড়ে আছে গৃহস্থালী বর্জ্য। দুটি ওয়ার্ডের এক একটি এলাকা যেন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। স্থানীয়রা বলছেন, ওই এলাকার সরকারি রাজস্বগুলো আগে যেতো ইউনিয়ন পরিষদে। ফলে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কিছু কাজ করা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন রাজস্বগুলো চলে যায় সিসিকের তহবিলে। কিন্তু বিপরীতে উন্নয়নবঞ্চিত ওইসব এলাকার লোকজন। বাড়ির খাজনা, পয়োনিষ্কাশন ও ড্রেনেজসহ সবখাতের টাকাগুলো জমা হচ্ছে সিসিকে।
একবছর আগে সিটি করপোরেশেনে যুক্ত হয়েছে সিলেট সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা। কিন্তু বর্ধিত ওই ওয়ার্ডগুলোতে সিসিকের কোনো ছোঁয়া নেই উন্নয়নের। ড্রেনেজ ও কালভার্ট ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই রূপ নেয় জলাবদ্ধতা।
এলাকাবাসী জানান, ৫ বছর আগে নগর সম্প্রসারণে শুরু হয় সীমানাজরিপ। তখন থেকেই থমকে আছে ওইসব এলাকার উন্নয়ন।
সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ মিয়া বলেন, ‘বিগত বন্যায় আমাদের এলাকায় সবকটি রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদকে বলা হলে তাদের উত্তর- এটি এখন উপজেলা পরিষদের আওতাভুক্ত নয়, আরবান এরিয়া হিসেবে যুক্ত হয়েছে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে।’
এ ব্যাপারে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিসিকে নতুন আওতাভুক্ত এলাকাগুলোর জন্য সরকারের কাছে অর্থ চেয়ে প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। টাকা পাওয়া গেলেই কাজ শুরু হবে।
এসএন