বহিষ্কারের সুপারিশের পরও আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে রাজু
সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার জন্য ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক রাজু আহম্মেদের সঙ্গে সকল সাংগঠনিক সম্পর্ক ছিন্ন করে তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু শনিবার (৮ অক্টোবর) ঝিনাইদহ শহরের ফুড সাফারি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে রাজু আহম্মেদকে দেখা গেছে। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চেয়ারে বসে আছেন। ওই অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপিও ছিলেন।
সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে বক্তব্য রাখা জেলা যুবলীগ নেতা রাজুর উপস্থিতি নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে গত ২৬ সেপ্টম্বর ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আছাদ সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রাজুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার যে বিবৃতি দেওয়া হয় তা ছিল মুলত লোক দেখানো।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবলীগ নেতা রাজু ও এস এম রবির অডিও রেকর্ড ভাইরাল হলে তা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর দৃষ্টিগোচর হয়। অডিও রেকর্ডে যুবলীগ নেতা রাজু জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কনক কান্তি দাস সম্পর্কে অশ্লিল ও কুরুচিপুর্ন শব্দ ব্যবহার করে তার বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উসকানি দেন।
এ ছাড়া রাজু পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস সম্পর্কে অশ্লিল শব্দ ব্যবহার করে গালিগালাজ করেন। রাজুর এহেন কথোপকথন দলীয় শৃংখলা পরিপন্থি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা ও শিষ্টাচার বহির্ভুত বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। রাজু অডিওতে এমন বক্তব্য দিয়ে সংগঠন বিরোধী অপরাধ করেছেন মর্মে বলা হয়। ফলে জেলা আওয়ামী লীগ রাজুর সাথে সকল সাংগঠনিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং এ ঘটনার কোন দায় দায়িত্ব ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ বহন করবে না।
দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আছাদ আরো জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগকে রাজুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু তাকে তো বহিষ্কার করা হয়নি, বরং তার সঙ্গে জেলা আওয়ামীলী লীগ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতাদের আরো ঘনিষ্টতা দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি যুবলীগ নেতা রাজু ও হামদহ এলাকার যুবলীগ কর্মী এস এম রবির কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হলে তা মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র দুই নেতা কনক কান্তি দাস এবং জীবন কুমার বিশ্বাসকে 'মালাউন' ও 'চাড়াল' বলে গালি দেয় যুবলীগ নেতা রাজু।
এছাড়া আসন্ন জেলা পরিষদে কনক কান্তি দাসের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহনের কথাও জানান রাজু। ফলে ফেসবুকে দেশ বিদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে যুবলীগ নেতা রাজুকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবী তোলে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কেও কথা বলতে রাজি হননি।
এএজেড