যে গ্রামের ২৫ ভাগ মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত
প্রায় দেড় বছর আগে চর্মরোগে আক্রান্ত হন এক গৃহবধু। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। গ্রামটির নাম পাবনা পাড়া। ইতিমধ্যে সেই গ্রামের প্রায় ২৫ ভাগ মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পুরো গ্রামে। ভুক্তভোগীদের দাবি,তারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকেও দেখিয়েছেন। ওষুধ খেলে ভালো থাকেন। ওষুধ বাদ দিলে কয়েকদিনেই ওই রোগ ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে। তবে স্থানীয়,স্বাস্থ্যবিভাগ বলছেন, দ্রুতই ওই ব্যাপারে কাজ শুরু করবেন তারা।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মতো বের হয়। এরপর চুলকানো শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ওই সমস্যা। ওই অবস্থায় শান্তি পেতে চুলকানো শুরু করলে লাল হয়ে যায়। এক পর্যায়ে
চুলকানোর কারণে রক্ত বের হয়।
পাবনা পাড়া মহল্লার সুলতানের স্ত্রী লিমা জানান,প্রায় দেড় বছর আগে হঠাৎ তার ওই সমস্যা হয়।
তার তিন দিন পরে তার মেয়ের শরীরেও ওই লক্ষণ দেখা দেয়। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেও কোনো প্রতিকার পাননি। এরপর নাটোর শহরের একজন চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন। এরপরও আরোগ্য না হওয়ায় তিনি পর পর চর্ম ও মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ প্রায় ৭ জন ডাক্তার দেখিয়েও রোগমুক্ত হননি।
ওই রোগে আক্রান্ত হাজেরা, রিমা, সুলতান, মেহেদী জানান, দিন রাত ২৪ ঘণ্টা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকায়। অনেক ওষুধ খেয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে ওই গ্রামের ৫০-৬০ জন চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন যা গ্রামটির জনসংখ্যার প্রায় ২৫ ভাগ। এ নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান, ওই রোগে নারী,পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ নিতে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামে সরেজমিনে খোঁজ নিতে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই রোগাক্রান্তদের কয়েকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে বলা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসআইএইচ