সবুজ মাল্টায় রঙিন স্বপ্ন
নীলফামারীর ডিমলায় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দেশি জাতের মাল্টা চাষ। সবুজ মাল্টা চাষে ব্যপক ফলন হওয়ায় চাষিদের চোখে এখন রঙিন স্বপ্ন। এতে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন মাল্টা চাষিরা। সবুজ রঙের এই মাল্টা স্থানীয় বাজারেরর চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, দেশি মাল্টা চাষ যেভাবে বাড়ছে, ভবিষ্যতে বিদেশি জাতের মাল্টার ওপর আর নির্ভরশীল হতে হবে না আমাদের।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এখন প্রায় ১৬ একর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মধ্যে মাল্টার চারা, প্রয়োজনীয় সার, প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাই ফলন ভালো হয়েছে। তা ছাড়া বাজারে মাল্টার দাম ও চাহিদা দুটোই ভালো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক গাছে ঝুলে আছে থোকাথোকা সবুজ মাল্টা। যা প্রায় এক মাস পর থেকেই বিক্রি করা হবে বলে জানায় চাষিরা। উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের মাল্টাচাষি নুর আলম, ফেসবুক ও ইউটিউবে দেশে মাল্টা চাষের সম্ভাবনা দেখে নিজের ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেছিলেন। সফলতা পাওয়ায় এবার আরো ২ একর জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। এবার তিনি ১ লাখ টাকার উপরে মাল্টা বিক্রি করেছেন।
নুর আলম বলেন, ধানের দাম তেমন না পাওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমে ১ একর জমিতে ২০০টি মাল্টা চারা রোপণ করি। মাত্র ২৪ মাসে সব গাছে মাল্টা ধরেছে। প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত মাল্টা ধরে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা, যা ফলন হয়েছে তাতে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। এছাড়াও এ জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মরিচ, হলুদ, পেঁপে, আনারস, বেগুন, আদাসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজির চাষ তিনি করছেন বলে জানান।
উপজেলার নাউতারা এলাকার মাল্টা চাষি মনিরুজ্জামান জানান, শখের বসে এক বিঘা জমিতে প্রাথমিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু করি। লেবার খরচ, বাগানে বেড়া দেওয়া ও বছরে ৩-৪ বার সার দেওয়াসহ মোট ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গাছ লাগানোর প্রথম বছরেই ফল আসতে শুরু করে। তবে প্রথম বছর ফল সংগ্রহ করা হয়নি। দ্বিতীয় বছর প্রচুর পরিমাণে ফল আসে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী বলেন, এই উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ থেকে ১০ টন মাল্টা উৎপাদন হয়। একবার মাল্টা বাগান করলে ২০ বছর পর্যন্ত টানা ফল পাওয়া যায়।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
এএজেড