কুড়িগ্রামে বেগুনে লাভ, চাষিদের মুখে হাসি
গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে বেগুনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বেগুন চাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি। উপজেলায় বেগুনের বাম্পার ফলনের পর ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে নেই কোনো দুশ্চিন্তা।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়া বাজারে ভালো দাম থাকায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা প্রতিদিন সকালে ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করাসহ ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
যেসব চাষির নিজস্ব জমি নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে স্বচ্ছলভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ অঞ্চলের কৃষকরা অধিক লাভের আশায় প্রতিবছর আগাম বেগুন চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। শুধু বেগুন চাষ নয় পাশপাশি সারা মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা। এতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এ অঞ্চলের শত শত কৃষক পরিবার।
গত দুই সপ্তাহ ধরে বেগুন ক্ষেতেই বিভিন্ন এলাকার পাইকারদের কাছ থেকে প্রান্তিক চাষিরা প্রতি মণ ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এরকম বাজার দর থাকলে বেগুন ক্ষেতের সব ধরনের খরচ মিটিয়ে বিঘাপ্রতি ৫০-৮০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বেগুন চাষিরা।
নাওডাঙ্গা এলাকার বর্গাচাষি সন্তোষ চন্দ্র রায় জানান, তিনি ২৫ বছর ধরে মানুষের জমি বর্গা নিয়ে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ করে আসছেন। তিনি অন্য সবজির পাশাপাশি দুই বিঘা জমিতে আগাম বেগুন চাষ করেছেন। প্রতি মণ ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। বেগুনের দাম এরকম থাকলে দুই বিঘা জমির বেগুন প্রায় ২ লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব বলে জানান এ চাষি।
কুরুষা ফেরুষা এলাকার বেগুন চাষি শফিকুল ইসলাম ও পুলিল চন্দ্র রায় জানান, এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারা জানান, প্রতি বিঘায় বেগুন চাষাবাদ করতে খরচ হয় কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বেগুন ক্ষেতে রোগমুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ বেগুনের ভালো দাম থাকলে ১ বিঘায় ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব। সেই যাবতীয় খরচ মিটিয়ে বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। বেগুনের মণ ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা। এরকম দাম থাকলে বেগুন চাষিরা লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা বেগুন চাষে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি খরিপ-২ মৌসুমে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। অধিকাংশ কৃষক বেগুন বিক্রি করতে শুরু করেছেন। এ বছরও বেগুন চাষিরা অধিক লাভবান হবেন। শীত মৌসুমের জন্য চাষিরা আগাম বেগুনের চারা রোপনসহ ১৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেছেন।
এসজি