তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কাছে জিম্মি রমেক
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিন্ডিকেট চক্রের দৌড়াত্ম, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও জনদূর্ভোগের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন সমাবেশ করেছেন মেডিকেলের চিকিৎসকরা। সোমবার দুপুরে হাসপাতাল চত্বরে রংপুর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ বিমল রায়ের সভাপতিত্বে, আইসিইউতে কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ জামাল উদ্দিন মিন্টুর সঞ্চালনায় মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ একেএম নুরুন্নবী লাইজু, বিএমএর রংপুর জেলা সভাপতি ডাঃ দেলোয়ার হোসেন, ডাঃ মামুনুর রহমান মামুন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ সুজা-উদ-দৌলা, ডাঃ সারোয়াত হোসেন চন্দন, ডাঃ আব্দুল ওয়াহাব, ডাঃ শাহাজাদা পিন্টু, ডাঃ মঞ্জুরুল কবির প্রিন্স।
মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তারা বলেন, উত্তর অঞ্চলের আড়াই কোটি মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দূর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। তৃতিয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কতিপয় কর্মচারীর অসাধু চক্র হাসপাতালে রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে চিকিৎসার প্রতিটি পদে পদে রোগী ও তাদের স্বজনদের জিম্মি করে হতদরিদ্র মানুষের কাছে অর্থ আদায় করছে। তারা বিভিন্ন পরীক্ষার নাম করে হাসপাতালের রোগীদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে অর্থ লুটে নিচ্ছে। অসাধু চক্রের দৌড়াত্মের প্রতিবাদ জানালে রোগী ও তাদের স্বজনরা মারধরের শিকার হচ্ছেন। এই চক্রের কারণে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। চিকিৎসকরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। চিকিৎসকরা অবিলম্বে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রসঙ্গত,রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বকশিষ হয়রানির স্বিকার হয়েছেন হাসপাতালের ডাক্তার এ.বি.এম রাশেদুল আমীর। এখানে শুধু ডাক্তারেইনন রোগী ও তাদের স্বজনদের নানা প্রকারের হয়রানির ঘটনা এখানে নিত্য দিনের। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে রোগীর মৃত্যুর পর কান্নায় আত্মহারা স্বজনদের দিতে হয় বকশিস নামের উৎকোচ। রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে উৎকোচ বা বকশিস ছাড়া অসুস্থ মানুষের সেবা পাওয়াই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। এ বকশিস না পেলে রোগীর স্বজনদের উপর চড়াও হওয়া থেকে শুরু করে মার-ধরের ঘটনা ঘটে থাকে।
এখানে অবস্থার দৃষ্টিতে মনেহয় কর্মচারী, দালাল এবং বিভিন্ন পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ানো বকশিস সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের কাছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেন জিম্মি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে বকশিস দাবি করেছিলেন চুক্তিভিত্তিক সিন্ডিকেটের কয়েকজন কর্মচারী।
কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, সেখানে দেখা যায় তিনজন কর্মচারী এসেছেন কর্মকর্তার কাছ থেকে বকশিস নিতে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হন চিকিৎসক এ.বি.এম রাশেদুল আমীর। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট। বকশিস চাওয়ার এ ঘটনা এবং রোগী হয়রানি প্রসঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর গত ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন চিকিৎসক এ.বি.এম রাশেদুল আমীর।
চিকিৎসক রাশেদুল আমীর অভিযোগে বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় জানতে পেরে তারা ৫০ টাকা ভর্তি বাবদ নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা এবং অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসাবে ভর্তি ফি না নেওয়ার কথা।
এএজেড