খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল না পেয়ে বিক্ষোভ
ঝিনাইদহে হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরের চালের উপকারভোগীদের অনলাইনে তালিকা প্রণয়ন শতভাগ অর্জিত হয়নি। গতকাল বুধবার পর্যন্ত সারা জেলায় ৮২% তালিকা সম্পন্ন হলেও ৮ হাজার ১৩০ জন উপকারভোগীর অনলাইন করা হয়নি। ফলে অনেক ইউনিয়নে উপকারভোগীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। গত পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে এই তালিকা প্রণয়নের কাজ শরু হয়েছে এবং ৩০ সেপ্টম্বরের মধ্যে অনলাইন সম্পন্ন করা না হলে চাল পাবেন না বাদ পড়া উপকারভোগীরা।
ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ঝিনাইদহের ৬৭টি ইউনিয়নে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৪৪ হাজার ৩৪০। এরমধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৩৬ হাজার ২১০ জনের তালিকা অনলাইন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ইউপি চেয়ারম্যানদের বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও রাজনৈতিক ও সামাজিক বিরোধের কারণে দ্রুত অনলাইন পক্রিয়া ঝুলে গেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে এখনো ২৭০৭ জনের অনলাইন বাকী থাকায় তারা ১৫ টাকা কেজি দরের চাল পাচ্ছেন না।
এর মধ্যে ফুরসন্দি ইউনিয়নে ৮২৭ জন উপকারভোগীর মধ্যে মাত্র ১৪৩ জনের অনলাইন করা হয়েছে। এখনো ৬৮৪ জন হতদরিদ্র এই তালিকার বাইরে রয়েছেন। ফলে ১৫ টাকা কেজির চাল না পেয়ে তারা ফুরসন্দি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ফুরসন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিকদার আগের চেয়ারম্যানের করা তালিকা হালনাগাদ করতে টালবাহানা করায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে মোক্তারপুর গ্রামের উপকারভোগী সাজু ও মহিউদ্দীন অভিযোগ করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খোন্দকার তাজউদ্দীন আহম্মেদ জানান, সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ১৯৭ জন। কিন্তু অনলাইনে তালিকা হয়েছে ১৩ হাজার ৪৯০ জনের। এখনো বাকী রয়েছে ২৭০৭ জনের।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, সাধুহাটী ইউনিয়নে ৫৭ জন, মধুহাটী ইউনিয়নে ১৪৫ জন, সাগান্না ইউনিয়নে ১৩৮ জন, হলিধানী ইউনিয়নে ১৯৮ জন, কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৩২ জন, গান্না ইউনিয়নে ২৪১ জন, মহারাজপুর ইউনিয়নে ১৯২ জন, পাগলাকানাই ইউনিয়নে ১৯৪ জন, পোড়াহাটী ইউনিয়নে ১০৬ জন, হরিশংকরপুর ইউনিয়নে ১০৩ জন, পদ্মাকর ইউনিয়নে ৭৩ জন, দোগাছি ইউনিয়নে ৫০ জন, ঘোড়শাল ইউনিয়নে ৯৬ জন, কালীচরণপুর ইউনিযনে ৯০ জন, সুরাট ইউনিযনে ৭৭ জন, নলডাঙ্গা ইউনিয়নে ১৩৫ জন ও ফুরসন্দি ইউনিয়নে ৬৮৪ জন উপকারভোগীর অনলাইন বাকী রয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান আলী জানান, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের সামাজিক দলের লোক না হওয়ায় অনেক উপকারভোগীকে ইচ্ছাকৃত ভাবে অনলাইনে তালিকা করছে না। এ নিয়ে ইউনিয়নে ইউনিয়নে ক্ষোভ বাড়ছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তারা বলছেন, সার্ভার ডাউন থাকায় তারা অনলাইনে কাজ করতে পারছেন না। ফুরসন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিকদারের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহিন জানান, আমি সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ফোনে ও সরাসরি বলেছি দ্রুত অনলাইনে তালিকা করতে। কিন্তু অনেক ইউনিয়নে গাফলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কার্ডধারী সবাই সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল পাবেন, হতাশ হওয়ার কারণ নেই।
এএজেড