সরকার জনগণের নিরাপত্তায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, সরকার মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে কঠোর অবস্থানে আছে। সরকারের এই মুহূর্তে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। আজ শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমরা প্রথমত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের এলার্ট করেছি। তারা যেন জনগণকে নিরাপদে থাকার নির্দেশনা দিতেও তাদের জানানো হয়েছে। এখন আমরা জরুরী সভা আহবান করেছি। সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব সীমান্তের মানুষদের আরো কিভাবে নিরাপদে রাখা যায় সেই বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থ চিন্তা করে আমরা গতকাল শুক্রবার রাত ১১ টার মধ্যে ঘুমধুমের এসএসসি পরীক্ষার সেন্টার পরিবর্তন করেছি। রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা সেই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার সেন্টার পরিবর্তনের কাজ করেছি। আমরা ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করেছি, ঠিক একইভাবে স্থানীয় জনসাধারণের বিষয়টি চিন্তা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, শুক্রবার রাতে মর্টারশেলের আঘাতে এক রোহিঙা কিশোর ও পাঁচজন আহত হওয়ার পরে সীমান্তে আতঙ্কে কাজ করে । এ সময় তুমব্রু সীমান্তে থাকা দুই গ্রামের ৬০টি পরিবার পার্শবর্তী তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়। তবে শনিবার সকাল ১২ টার পর গোগুলির আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেলে আবারও তারা নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকালে একটু গোলাগুলি হয়েছে। তবে বৃষ্টি থাকায় হলে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। বেশিরভাগ রৌদ্রময় সময়ে গোলাগুলি চলে। গতকালও রাতে যুদ্ধবিমানের উপস্থিতি মায়ানামারের অভ্যন্তরে টহল দিতে দেখা যায়। রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, শনিবার দুপুর ১২টার পর আর কোন গোলাগুলি হয়নি। কোন উত্তেজনা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এখন। তবে রাতে কি হয় বলতে পারে না।
প্রসঙ্গত, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী বিজিপির সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী 'আরাকান আর্মির' গোলাগুলি চলছে। ২৮ আগস্ট বিকেল ৩টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি মর্টাসেল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের উত্তরপাড়া এলাকায় এসে পড়ে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় আরো দুটি মর্টারসেল পড়ে। তবে ঘটনায় কোন ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
ঘুমধুম সীমান্তে গতকাল শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যাতেও গোলাগুলি চলেছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। এতে এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছে।
এএজেড