নীলফামারীতে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত
সোমবার গভীররাত থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পর মঙ্গলবার সারাদিন ও বুধবার সকাল থেকে নীলফামারী জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুই দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় যান ও মানুষের চলাচল ব্যহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না বাড়ির বাইরে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ে। এ ছাড়াও বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। সোমবার রাত থেকে বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাতের ফলে বিপাকে পড়েছে অটোরিকশা ও ভ্যান চালকরা। যাত্রী না থাকায় সারাদিনে তারা আয় করতে পারছেন না। ফলে পরিবার নিয়ে তারা দুশ্চচিন্তায় রয়েছে।
শহরের রিকশাচলক আব্দুর রশিদ জানান, বৃষ্টির কারণে যাত্রী কম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আয় কমে গিয়ে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
গফুর নামে এক রিকশাচালক জানান, মঙ্গলবার সারাদিনে ১৫০ টাকা পেয়েছি। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়ে থাকে।
ভ্যানচালক আব্দুল লতিফ জানান, বৃষ্টির কারণে কাচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় ভ্যানের আয়ও কমে গেছে। প্রতিদিন যেখানে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭০০ টাকা ইনকাম করে থাকি সেখানে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা ভাড়া মেরেছি। আকাশের যা অবস্থা সারাদিন বৃষ্টি হতে পারে। সারাদিন বৃষ্টি হলে ভাড়া মারতে না পারলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
মোক্তার নামে এক পান বিক্রেতা জানান, বৃষ্টির কারণে মানুষজন বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় বিক্রি অনেক কমে গেছে। বৃষ্টির সময় দোকানে আয় কমে যায়। ফলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
ডোমার পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী মিথুন রায় জানান, এই মাসে এমনিতেই বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে তার উপর টানা বৃষ্টির কারণে বিক্রি কমে যাওয়ায় মঙ্গলবার দোকানে প্রায় ৬ হাজার টাকার মতো লোকসান হয় । বুধবার সকালেও বৃষ্টি আসার কারণে দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। টানা বৃষ্টিপাতে দরুন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েছেন বিপাকে। ছাতা নিয়ে স্কুল-কলেজে গেলেও বৃষ্টির পানিতে ভিজেই তাদের ক্লাস করতে হচ্ছে।
তা ছাড়াও গত দুই দিন থেকে টানা বৃষ্টিতে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যাংকসহ সকল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বিভিন্ন এনজিও কর্মীদেরও নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বৃষ্টির কারণে। অফিসে যেতে হবে বলেই বাধ্য হয়ে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হয়েছে।
এদিকে ভারি বৃষ্টিপাতের দরুন নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চল জায়গাগুলোতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের অনেক জায়গা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মানুষজনকে কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে ডিমলা আবহাওযা অধিপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (আজ সকাল ৬ টার আগ পর্যন্ত) জেলায় ৫৪ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হযেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এসআইএইচ