কুমিল্লায় কিশোর শাহাদাত হত্যায় গ্রেপ্তার ৬
কুমিল্লা পার্ক রোডে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে শাহাদাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত রতন গ্রুপের প্রধান রতনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন-আকাশ, সিয়াম, তানজিদ, ইয়াসিন, রিফাত।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিভিন্ন সময় অভিযানে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি সুইচ গিয়ার, ৪টি বড় ছোড়া এবং ১টি এন্টিকাটার উদ্ধার করা হয়।
রবিবার (২১ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব কুমিল্লা সিপিসি-২ এর অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে নিহত ভিকটিম শাহাদাৎ হোসেন (১৭) ঈগল গ্রুপের সদস্য। 'ঈগল গ্রুপ' এর সদস্যরা গত ৬/৭ মাস আগে 'রতন গ্রুপ' এর একজন সদস্যকে মারধর করে। উক্ত ঘটনার জের ধরে উভয় গ্রুপে মধ্যে শত্রুতা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, 'রতন গ্রুপ' এর সদস্যরা ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এবং 'ঈগল গ্রুপ ' এর সদস্যরা ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থান করে। এই ওয়ার্ডগুলোর মাঝখানে ‘ধর্মসাগর পার্ক’ ( নগর উদ্যান) অবস্থিত, যা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে যখন 'রতন গ্রুপ' এর সদস্যরা ওই পার্কে যায় তখন 'ঈগল গ্রুপ' এর সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেয়। একইভাবে ‘ঈগল গ্রুপ' এর সদস্যরা ওই পার্কে গেলে 'রতন গ্রুপ' এর সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেয়। ঘটনার দিন গত ১৯ আগষ্ট বিকাল ৪টায় ’ঈগল গ্রুপ’ এর সদস্যরা 'রতন গ্রুপ' এর সদস্য তানজীদের পরিচিত এক ছোট ভাইকে মারধর করে আহত করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে 'রতন গ্রুপ' এর সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেয়, ‘ঈগল গ্রুপ' এর সদস্যদের যেখানেই পাবে সেখানেই প্রতিহত করবে। এমন সময় 'রতন গ্রুপ' এর সদস্য তানজীদ এসে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যদের জানান ‘ঈগল গ্রুপ’ এর সদস্যরা পার্কে অবস্থান করছে। পরবর্তীতে রতনের নেতৃত্বে 'রতন গ্রুপ' এর অন্যান্য সদস্যরা ফৌজদারী মফিজাবাদ কলোনী মাঠে একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ার লেডি অব ফাতেমা স্কুলের সামনে ‘ঈগল গ্রুপ' এর সদস্যদের ধাওয়া করে। ধাওয়ার এক পর্যায়ে ভিকটিম শাহাদাৎ দৌড়ে পালাতে না পারলে রাব্বিল তাকে ধরে ফেলে ও তাৎক্ষণিক গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা শাহাদাতকে কিল-ঘুষি, লাথি ও এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন শাহাদাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা
করে।
আসামিদের দেওয়া তথ্য ও প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘রতন গ্রুপ' এর সদস্য রাব্বিল ভিকটিম শাহাদাতকে ধরে থাকা অবস্থায় তানজীদ সুইচ গিয়ার দিয়ে প্রথমে ভিকটিমকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে। গ্রুপের অন্য সদস্য রানা ভিকটিম শাহাদাতকে কিল-ঘুষি মারতে থাকা অবস্থায় অন্য সদস্য আকাশ সুইচ গিয়ার দিয়ে শাহাদাতের পেটের বাম পাশে বারবার আঘাত করতে থাকে। অন্য সদস্য হাসিব, রিয়াজ, সানি, সাব্বির ও আরো কতিপয় সদস্য ভিকটিমকে লাথি ও ঘুষি মারতে থাকে এবং রাসেল, সিয়াম, আসিফ বড় ছুরি নিয়ে ভিকটিম শাহাদাতকে চারপাশ থেকে ঘেরাও করে রাখে এবং নবী ভিকটিমের পিঠে বড় ছুরি দ্বারা আঘাত করলে ভিকটিম শাহাদাত ঘটনাস্থলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ‘রতন গ্রুপ' এর সদস্যরা দ্রুত ওই স্থান থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এসআইএইচ