ডিজিটাল কৃষি সেবা পৌঁছে দিচ্ছে কৃষকের বাতিঘর
প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা পৌঁছে দেওয়ার নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে ছবিঘর সংগঠন। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই সংগঠন ২০২২ সালে শুরু করেছে কৃষকের বাতিঘর নামে একটি প্রোজেক্টের। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তারা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বীজ ও সাড়। তাছাড়া তারা কৃষকদের সঠিক নিয়মে চাষ, সঠিক পরিমাণে সাড় ও কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে করে তারা ধামরাই ও সাভারের প্রায় দেড় শতাদিক কৃষকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তাদের সেবা। মূলত বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্যগুলোই প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা থেকেই শুরু করা হয় এই উদ্যোগের বলে জানান ছবিঘরের সদস্য আসলাম হাওলাদার।
কৃষকের বাতিঘরের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ছবিঘরের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্স ঘোষ বলেন, বাংলাদেশ সরকার তাদের ডিজিটাল সেবা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু অনেক কৃষক এই ব্যপারগুলো না বোঝায় এই সেবা নিতে পারছে না। তাই আমাদের এই উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের এই সেবা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পতিত থাকবে না একটি আঙিনাও। তাই আমরা কৃষকদের পাশাপাশি কৃষাণীদের বীজ ও সাড় উপহার দিচ্ছি যাতে তারা বাড়ির আঙিনায় সবজি বা ফল চাষ করতে পারে। তাছাড়া কৃষদের সার ব্যবহ্যারের নিয়ম এর ব্যাপারেও সচেতন করছি আমাদের কৃষকের বাতিঘর প্রোজেক্ট এর মাধ্যমে। তাছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত তাদের খবর রাখছি। যে কোন প্রয়োজনে আমরা তাদের পাশে আছি।
ধামরাইয়ের সুয়াপুরের ঈশানগর গ্রামের কৃষক মনু মিয়া বলেন, আমি পড়ালেখা করি নাই। বেশিকিছু জানিও না। বাপ-দাদারা যেমনে চাষবাস করছে, তেমনেই করতেছিলাম। কিন্তু হ্যাতে ফলন তেমন ভালো অইতো না। আমার লস অইতো। এই কয়মাস ধইরা ওনারা (কৃষকের বাতিঘর) আমাগো শিখাইছে। কেমনে চাষাবাদ করলে ভালো ফলন পাওন যাইবো, সার-ঔষধ কতটুকু দেওন লাগবো, এইসব ওনারা শিখাইছে। ওনাগো কথামত চাস কইরা ভালো ফলন পাইতাছি। তাছারা ওনারা আমাগো গ্রামের অনেক কৃষকরে সার, বীজ, ঔষধ ফ্রী দেয়।
সাভারের গেরুয়া গ্রামের কৃষাণী রিনা বানু জানান, আগে আমাদের উঠানে অনেক খালি যায়গা পইরাই থাইকতো।কিন্তু তেমন চাষবাস করা হইতো না। ওনারা আইসা কইলো, কোনো জায়গা ফেইলা রাখন যাইবো না। এইটা নাকি সরকারের নির্দেশ। ওনারা আমাগো বিভিন্ন সবজির বীজ দিলো আর কেমনে চাষ করলে ভালো ফলন পাওন যাইবো সেটাও শিখাইলো। তারপর থেকে আমাগো বাড়ির আশেপাশের কোনো জায়গা খালি রাখিনা। বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করি। যা আমরা খাওনের পর আবার বেচিও।
ছবিঘরের উপদেষ্টা সাভারের তেতুলঝোড়া ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুল আলম সমর বলেন, শুরু থেকেই আমি ওদের সাথে আছি। ওদের সামাজিক কাজগুলোতে আমি আমার সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করি। ওরা অনেক ভালো কাজ করছে। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এমন তরুনদেরই প্রয়োজন।
এএজেড