ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর, চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে যশোর আদালতে দুটি মামলা হয়েছে।
রবিবার (১৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার সাতমাইল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও সোনাতনকাটি গ্রামের মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরমান হোসেন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খানকে অভিযোগ দুটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- সোনাতনকাটি গ্রামের মৃত দ্বীন আলী মোড়লের ছেলে বাগআঁচড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক, উলাসী গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, মহিষা গ্রামের রাসেল সরদারের ছেলে লুকমান সরদার, সোনাতনকাটি গ্রামের গণি মোল্যার ছেলে আনোয়ার আলী ও হাসান আলীর স্ত্রী ফুলসিরাত বেগম।
বাদী আব্দুর রাজ্জাক জানান, জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে তিনি গরুর ব্যবসা করতেন। কিন্তু করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর তার কাছে ৩০ হাজার টাকা পেতেন। ২০২১ সালে তিনি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা দিতে পারবেন না বলে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেন। তবে চলতি বছরের ৩০ জুলাই আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ পান তিনি।
তিনি জানান, চেয়ারম্যানের নোটিশ পেয়ে তিনি গত ১ আগস্ট ইউপি কার্যালয়ে যান। এসময় তিনি কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ায় চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক তাকে মারধর করতে থাকেন। পরে চেয়ারম্যান কোমর থেকে পিস্তল বের করে ফোন ধরিয়ে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে চেক বই আনতে বলেন। এরপর একটি কক্ষে আটকে রেখে ওই চেকের একটি ফাঁকা পাতায় ও তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। পরবর্তীতে তিনি কাউকে কিছু না বলার হুমকি দিয়ে ইউপি কার্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেন।
অন্যদিকে বাদী মনিরুজ্জামান জানান, আসামি ফুলসিরাত বেগম ও লুকমান সরদার মানবপাচার দলের সদস্য। তার মেয়েকে ভারতে পাচারের সময় প্রশাসন ও জনগণের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে মনিরুজ্জামানের স্ত্রী আদালতে মানবপাচার দমন আইনে একটি মামলা করেন। এতে ফুলসিরাত ও লুকমান সরদার চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন।
তিনি আরও জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ পেয়ে গত ১৮ জুলাই তিনি ইউপি কার্যালয়ে যান। এসময় চেয়ারম্যান অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে মারধর ও ৪টি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকিও দেন তাকে।
এই দুই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে অভিযোগ করেন আব্দুর রাজ্জাক ও মনিরুজ্জামান। তবে তাদের অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানান শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান।
এসজি/