শোক দিবসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, অস্ত্র উদ্ধার
বরগুনায় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। ঘটনার সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, বেলা ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায়।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ লাঠিচার্জ করে দুই গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তারা কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ শিল্পকলা ও লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় শিল্পকলার ছাদ থেকে তাদের ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। তাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপের কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে।
রেজা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এসময় ছাত্রলীগ পরিচয়ে কিছু সন্ত্রাসী আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, কমিটি ঘোষণার পর এই সন্ত্রাসীরা একাধিকবার আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করেছে এবং শহরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান বলেন, শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে একটি গ্রুপ শিল্পকলা একাডেমির দ্বিতীয় তলা থেকে পুলিশের গাড়িতে ইট ছুঁড়ে মারে। পুলিশ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
সভাপতি পদবঞ্চিত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লা মুঠোফোনে জানান, এ ঘটনায় আমি বা আমার সমর্থক কোনো ছাত্রলীগ কর্মী জড়িত নয়। আমি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। কী ঘটেছে আমি জানার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন। এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই সদ্য ঘোষিত এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে পদবঞ্চিতরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও ভাঙচুর করে আসছে।
এসজি/