একটি কৃত্রিম পা চান কৃষক কামাল
১৯ বছর ধরে এক পায়ে কৃষিকাজ করে সংসার চালান তিনি। মা, স্ত্রী, ১ ছেলে এবং ১ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। দুর্ঘটনায় পা হারানো কামাল (৩২)-এর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের নাগপুর গ্রামে।
শত কষ্ট ও প্রতিকূলতার মাঝেও ঘরে-বাইরে, মাঠে সকল জায়গায় তার সংগ্রামী পথচলা। জীবনসংগ্রামের কষ্টকে জয় করে এগিয়ে চলছেন তিনি। প্রতিবন্ধকতার বাধাকে তুচ্ছ করে এগিয়ে চলার এ উদাহরণ এলাকাবাসীর কাছেও অনুকরণীয় এখন।
২০০১ সালে ৫ম শ্রেণি পাশ করে অভাবের তাড়নায় কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিলেন কামাল। চাকরি নিয়েছিলেন গার্মেন্টসে। ২০০২ সালে গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফেরার পথে গাড়ি চাপায় তার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি হয়ে পড়েন অসহায়।
সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির পাশেই জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করতে তিনি ক্রাচে ভর দিয়ে জমির মাটি সমান করছেন। এক হাতে ক্রাচ, অন্যহাতে মই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে।
জানতে চাইলে কামাল বলেন, ‘কেলা কইরা দিবো? নিজের কাজতো আর ফালতারিনা। কষ্ট অইলেও করন লাগবো।’ (কে করে দেবে? নিজের কাজ তো আর ফেলে দিতে পারি না। কষ্ট হলেও করতে হবে)।
কামাল জানান, হাট-বাজারে যাওয়াসহ সংসারের সকল কাজ তাকেই করতে হয়। ক্রাচে ভর করে সকল কাজ তিনি করেন। এক সমাজ সচেতন ব্যক্তি তাকে একটি নতুন ক্রাচ দিয়েছেন। সেটিই তার চলাফেরার, সকল কাজের সম্বল।
দরিদ্র কামাল উদ্দিন জানান, তার একটি কৃত্রিম পায়ের প্রয়োজন। দেশের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সামান্য হলেও ঘুচবে তার কষ্ট।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত ভুইয়া মিন্টু বলেন, ‘কামালের শারীরিক অক্ষমতা থাকলেও সে কখনও বসে থাকেনি। নিজের মতো করে চলার জন্য সব সময় চেষ্টা করে। আমি তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
একে/এএন